বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে স্বর্ণের দাম। ইতিহাসে এই প্রথম, বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য ৩,৪০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও উদ্বেগ—দুইই বাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২১ এপ্রিল) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম একলাফে ২.২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৪০১.৪৯ ডলারে, যা সেশনের শুরুতে পৌঁছেছিল ৩,৪০৩.৯০ ডলারে—একটি সর্বকালের সর্বোচ্চ মূল্য। অন্যদিকে, ফিউচার মার্কেটে এই দাম দাঁড়িয়েছে ৩,৪১৩.৯০ ডলারে, যা ২.৬ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা এবং মার্কিন ডলারের মান হ্রাস পাওয়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। আইজি মার্কেটসের কৌশল বিশ্লেষক ইয়াপ জুন রং বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি ও মন্দার শঙ্কা বিবেচনায় স্বর্ণকেই নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।”
ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো যোগ করেন, “রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলারের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগ এবং শেয়ারবাজারের দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন। এই পরিস্থিতি আগামীতে দাম আরও বাড়াতে পারে।”
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এমন উত্থান বাংলাদেশেও প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানায়, শনিবার (১৯ এপ্রিল) ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরিতে স্বর্ণের দাম ২,৬২৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৬৭,৮৩৩ টাকা—যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের দাম এখন ১,৬০,২০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১,৩৭,৩০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ১,১৩,৪৯১ টাকা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিশ্ববাজারে মূল্য আরও বাড়ায় দেশের বাজারেও যেকোনো সময় আবার মূল্য সমন্বয় করা হতে পারে।
বাজুস বলছে, “বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় না করলে স্বর্ণ পাচারের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই নিয়মিত মূল্য হালনাগাদ করাটা জরুরি।”
Leave a Reply