নামাজ ইসলামে অন্যতম প্রধান ফরজ ইবাদত। পবিত্র কুরআনে প্রায় ৮২ বার নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। যেমন—সুরা নিসার ১০৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্ধারিত সময়ে ফরজ।”
হাদিস শরীফেও সময়মতো সালাত আদায়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সহিহ বুখারিতে উল্লেখ আছে, সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করেছিলেন—
আল্লাহর নিকট কোন আমল সবচেয়ে প্রিয়? রাসুল (সা.) উত্তরে বলেন, “নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায়।” এরপর যথাক্রমে পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার ও আল্লাহর পথে জিহাদকে শ্রেষ্ঠ আমল হিসেবে উল্লেখ করেন।
তবে যদি কোনো কারণে নামাজ ছুটে যায়, সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে তা কাজা আদায় করা আবশ্যক। অধিকাংশ ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, কাজা নামাজের ক্ষেত্রে কেবল ফরজ অংশ আদায় করলেই যথেষ্ট, সুন্নত আদায় না করলেও চলে।
তবে ফজরের কাজা নামাজের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে। সাহাবি আবু কাতাদা (রা.)-এর একটি হাদিস থেকে জানা যায়, একবার সফরের সময় ফজরের নামাজ ছুটে গেলে রাসুল (সা.) ঘুম থেকে উঠে প্রথমে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত এবং তারপর ফরজ আদায় করেন (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ৪৩৭)।
অর্থাৎ, ফজরের নামাজ কাজা হলে দুই রাকাত সুন্নতও আদায় করা উত্তম। এমনকি কেউ যদি ফরজ নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং সুন্নত আদায় করতে না পারেন, তবে পরবর্তীতে—সূর্যোদয়ের পরেও—সেই সুন্নত নামাজ আদায় করা জায়েজ।
তিরমিজির একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, “যদি কেউ ফজরের ফরজের আগে দুই রাকাত আদায় না করে থাকে, তবে সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে” (তিরমিজি, হাদিস: ৪২৩)।
ফজরের নামাজ কাজা হলে কেবল ফরজ নয়, বরং সুন্নত নামাজও আদায় করা উত্তম—এটি রাসুল (সা.)-এর সুন্নাত থেকে প্রমাণিত। তবে অন্যান্য ওয়াক্তের নামাজে শুধুমাত্র ফরজ কাজা করলেই যথেষ্ট।
Leave a Reply