শীতকালীন ঝড় গাজায় বাস্তুচ্যুত হাজারো ফিলিস্তিনির দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, জীবনরক্ষাকারী ত্রাণ—তাঁবু, কম্বল ও জরুরি আশ্রয় সামগ্রী প্রস্তুত থাকলেও সীমান্ত পারাপারে ইসরায়েলের বিধিনিষেধের কারণে সেগুলো গাজায় ঢুকতে পারছে না।
গাজা সিটির শাতি শরণার্থী শিবিরে ঝড়ের সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে দুই শিশুসহ ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করেন। এর আগে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, অপর্যাপ্ত আশ্রয়ের কারণে দুই সপ্তাহ বয়সী এক নবজাতকের ঠান্ডায় মৃত্যু হয়েছে—যা শিশু ও বয়স্কদের ঝুঁকির বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ঝড়ে গাজাজুড়ে আশ্রয়কেন্দ্র ও ব্যক্তিগত সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় ৩০ হাজার শিশু প্রভাবিত হয়েছে। দ্রুত মেরামত ও সহায়তা জরুরি।
গাজার সিভিল ডিফেন্স এক বিবৃতিতে পরিস্থিতিকে “প্রকৃত মানবিক বিপর্যয়” বলে অভিহিত করেছে।
এমন অবস্থায় কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনায় যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল রাখা, গাজায় অবিলম্বে ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে অগ্রগতির বিষয়টি গুরুত্ব পায়। কাতার জোর দিয়ে বলেছে—ত্রাণ “নির্বিঘ্ন ও শর্তহীনভাবে” গাজায় ঢুকতে দিতে হবে।
যুদ্ধবিরতি থাকা সত্ত্বেও গাজায় সহিংসতা পুরোপুরি থামেনি। কেন্দ্রীয় গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা সূত্র জানায়। খান ইউনুস ও পূর্ব গাজা সিটিতেও গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ক্বালকিলিয়ায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে এক তরুণ আহত হন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭০,৬৬৮ জন নিহত এবং ১,৭১,১৫২ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে ইসরায়েলে হামলায় ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষ আটক হন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.