ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ন্যূদিলিতে তলব করেছে। এটি মূলত বাংলাদেশের ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (NCP) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর ভারত-বিরোধী মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ভারতীয় উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে “সেভেন সিস্টারস” নামে উল্লেখ করে বলেছিলেন যে, এই অঞ্চলগুলোকে ভারত থেকে আলাদা করা হবে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, তলবের সময় হামিদুল্লাহকে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকায় ভারতীয় মিশনের চারপাশে নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে চরমপন্থী কিছু দলের পরিকল্পনা রয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “ভারত সম্পূর্ণভাবে সেই ভুল বর্ণনাকে প্রত্যাখ্যান করে যা চরমপন্থীরা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাকে ভিত্তি করে তৈরি করতে চাইছে। দুঃখজনক যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ তদন্ত পরিচালনা করেনি বা ভারতের সঙ্গে কোনো তথ্য শেয়ার করেনি।”
ভারত জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক মুক্তিযুদ্ধের বন্ধন এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও জনসম্পর্কমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে দৃঢ় হয়েছে। তারা বাংলাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো দেশে কূটনৈতিক মিশন ও পোস্টগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
“সেভেন সিস্টারস” মন্তব্য, হাসনাত আব্দুল্লাহ ইনকিলাব মঞ্চের আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বলেন, “সেভেন সিস্টারসকে ভারত থেকে আলাদা করা হবে।” তিনি দাবী করেন, কিছু অভিযোগের পেছনে ভারত সমর্থন করছে। এই উত্তেজক মন্তব্য করা হয়েছে বাংলাদেশের ৫৫তম বিজয় দিবস উদযাপনের সময়।
ভারত এই অভিযোগগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সহ দেশের আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হোক।
বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী মনোভাবের উত্থান, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং র্যাডিকাল ইসলামিক শক্তির উত্থান দেখা দিয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিলুপ্ত করার চেষ্টা এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন প্ররোচনামূলক মন্তব্য বাংলাদেশি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে করা হচ্ছে। সম্প্রতি অসমের কাচার জেলায় ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রহরী ব্যবস্থা ও সীমান্ত প্রহরী নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে যাতে চরমপন্থী উপাদান বা অননুমোদিত সীমান্ত অতিক্রম এড়ানো যায় এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.