লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিলের (UNIFIL) নিকটবর্তী এলাকায় আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। জাতিসংঘ এ হামলাকে নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে তীব্র সতর্কতা জানিয়েছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জাতিসংঘ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে একাধিক বিমান হামলা চালায় এবং ইউনিফিল শান্তিরক্ষীরা তাদের দায়িত্ব পালনের সময় সেই হামলা প্রত্যক্ষ করেন।
ডুজারিক বলেন, এমন সময়ে এই আক্রমণ করা হলো যখন লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র ও স্থাপনা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের এই পদক্ষেপ শুধু যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনই নয়, বরং নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের সরাসরি বিরোধিতা, যা ২০০৬ সালে ইসরাইল–হিজবুল্লাহ যুদ্ধ থামানোর জন্য গৃহীত হয়েছিল। প্রস্তাবে লিতানি নদী ও ব্লু লাইনের মধ্যে একটি অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথাও বলা আছে।
এর পাশাপাশি লেবাননে টহলরত শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনাও তুলে ধরেন জাতিসংঘের মুখপাত্র। তিনি জানান, বিনতে জবেইল এলাকায় তিনটি মপেডে ছয়জন ব্যক্তি ইউনিফিলের গাড়ির পেছনে তিন রাউন্ড গুলি চালায়। তিনি এটিকে গুরুতর লঙ্ঘন এবং অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে লেবানন কর্তৃপক্ষকে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেন।
জাতিসংঘ হামলাকারীদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনতে তাৎক্ষণিক ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানায়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবাননের অন্তত তিনটি শহরে বিমান হামলা চালানো হয়—জেবা, আল-মাজাদেল, মাহরুনা এবং বারাচিত এলাকায়। এসব স্থানে কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইল–লেবানন সরাসরি আলোচনার একদিনেরও কম সময়ের মধ্যেই নতুন এই হামলা চালানো হয়। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচে আদ্রেয়ি জেবা ও আল-মাজাদেলের বাসিন্দাদের শহর খালি করার নির্দেশ দেওয়ার মাত্র ঘণ্টাখানেক পরই বোমাবর্ষণ শুরু হয়।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইল প্রায় প্রতিদিনই লেবাননে হামলা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এসব হামলায় ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ১২৭ জনই নিরস্ত্র বেসামরিক।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.