আজ সোমবার মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে দাফন করা হয়—যে সন্তোষেই তিনি জীবনের সিংহভাগ ব্যয় করেছেন এবং যে মাটিতে তিনি আজ চিরশান্তির নিদ্রায়।
তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিএনপি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সাত দিনব্যাপী ভাসানী মেলাও চলছে।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া মজলুম জননেতা ভাসানীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯১১ সালে মওলানা মোহাম্মদ আলীর সান্নিধ্যে এসে। রেশমী রুমাল আন্দোলন, খিলাফত আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন—সবক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন জনগণের পক্ষে অগ্নিঝরা কণ্ঠস্বর। কৃষক-মজুরদের অধিকার আদায়ে ১৯২০-এর দশকে তিনি আন্দোলন গড়ে তোলেন আসাম এবং পূর্ব বাংলায়।
রাজনৈতিক জীবনে বহুবার দল পরিবর্তন করলেও তিনি কখনো তার মূল দর্শন—গণমানুষের মুক্তি—থেকে বিচ্যুত হননি। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা, ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারণ, ১৯৬৫ সালে ফাতেমা জিন্নাহকে সমর্থন—সবই ছিল পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ।
স্বাধীনতার পরও তিনি ছিলেন গণমানুষের কণ্ঠস্বর। ১৯৭৪ সালের ‘ভুখা মিছিল’, ১৯৭৬ সালের ফারাক্কা লংমার্চ—সব আন্দোলনই ছিল দেশের স্বার্থে, মানুষের অধিকারের পক্ষে তার অবিচল সংগ্রাম।
আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করা মানে—বাংলার নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেতনা আবার জাগিয়ে তোলা, গণমানুষের রাজনীতিকে পুনরায় চিনে নেওয়া।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.