নির্বাচনের উত্তাপ যত বাড়ছে, ততই চাপে পড়ছে দেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাত। একদিকে নির্বাচনের আগে রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্য আমদানির চাপ, অন্যদিকে ডলার সংকট ও বিনিয়োগে স্থবিরতা, এই তিন দিকের চাপই তৈরি করছে অর্থনীতির ত্রিমুখী সংকট।
আগামী ছয় মাসকে অর্থনীতির ভাগ্য নির্ধারণী সময় হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পপণ্য ও জ্বালানি আমদানি বেড়েছে। তবে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় আমদানি এখনো কিছুটা কম।
রমজান ঘিরে নিত্যপণ্যের আমদানি বাড়ায় পেঁয়াজ, ডাল, চিনি, ছোলা, খেজুর ও ভোজ্যতেলের মতো খাদ্যপণ্যে এলসির চাপ বেড়েছে।
প্রতিবছর আন্তর্জাতিক বাজারদর ও পরিবহন খরচের প্রভাবে এই আমদানির আর্থিক আকার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে থাকে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু ডলার সরবরাহ বা সুদের হার কমানোয় সমাধান নয়;
বরং প্রয়োজন আমদানি-রফতানি সহজ করা, করনীতি সংস্কার ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা।
নির্বাচনের পর নতুন সরকারের নীতি নির্ধারণ করবে বেসরকারি বিনিয়োগ কতটা গতি পাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন,
“নির্বাচিত সরকার এলে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বাভাবিকভাবেই চাঙ্গাভাব আসবে। কিন্তু বিনিয়োগ বাড়লে আমদানি-রফতানিতেও চাপ তৈরি হবে। তখন রিজার্ভ নিয়ে যে স্বস্তি আছে, তা নাও থাকতে পারে।”
তিনি আরও জানান, রমজান ঘিরে ভোগ্যপণ্য ও শিল্প কাঁচামালের আমদানির চাপ একসঙ্গে পড়বে, ফলে রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে।
গত বছর আমদানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছিল আমদানীকারকের সংখ্যাও, যা কিছু ক্ষেত্রে অর্থ পাচারের আশঙ্কা বাড়ায়। এবার সেই ঝুঁকি রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজরদারি জোরদার করছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ছয় মাসের অর্থনৈতিক নীতিই ঠিক করবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথচলা—
অর্থনীতি কি ঘুরে দাঁড়াবে, নাকি আরও চাপে পড়বে।