দেশের অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি বা ওটিএ-তে ক্রেতাদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে মালিকপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, বড় ডিসকাউন্টের ফাঁদে ফেলে অর্থপাচার করে বিদেশে পালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
ফ্লাইট এক্সপার্টের এমডি চলতি বছরের ২ আগস্ট হঠাৎ প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে দেশ ছাড়েন। এরপর গত ১৫ ও ২০ অক্টোবর আরও দুটি ওটিএ—ফ্লাই ফার ইন্টারন্যাশনাল ও ট্রাভেল বিজনেস পোর্টাল একই কায়দায় গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অস্বাভাবিক ডিসকাউন্টে টিকিট বিক্রি করে বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলে নিয়ে হঠাৎ উধাও হচ্ছে। সরাসরি এয়ারলাইন থেকে টিকিট কাটা জটিল হওয়ায় যাত্রীরা ট্রাভেল এজেন্সির ওপর নির্ভরশীল। ক্ষতিগ্রস্তরা জানাচ্ছেন, তারা অতিরিক্ত ছাড় এবং ফাঁদে পড়ে অর্থ হারাচ্ছেন।
ফ্লাইট এক্সপার্টের পলাতক চেয়ারম্যান এম এ রশিদ শাহ সম্রাট দাবি করেছেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধের পেছনে কর্মকর্তা ও কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্র দায়ী। তিনি বলেন, “আমাদের টিকিটের দাম ৬ হাজার, আপনি ৭ হাজার টাকা দেবেন। এতে কেউ কীভাবে বলে যে টাকা নিয়ে পালানো হয়েছে? আমাদের উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাওয়াই ছিল।”
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে ওটিএগুলোর ওপর কোনো সঠিক নজরদারি নেই, এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী রিফান্ড বা রিইস্যুর অধিকার শুধুমাত্র যাত্রীর। ফলে গ্রাহকরা নিয়মহীনভাবে প্রতারিত হচ্ছেন।
সাবেক ওটিএ সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, “অতিরিক্ত ছাড় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন। সরকারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত এটি বাস্তবায়িত হবে।”
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালে ‘লেটস ফ্লাই’ এবং ২০২১ সালে ‘২৪ টিকিট ডটকম’ নামের দুটি ওটিএ গ্রাহক ও সাব এজেন্টদের প্রায় ১৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।