আগামী ২৫ বছরে বিশ্বে প্রায় ১২০ কোটি তরুণ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে, কিন্তু তাদের জন্য পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরি না হলে বৈশ্বিক অর্থনীতি এক বড় সংকটে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা। ২০২৫ সালের বার্ষিক সভায় দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, “এখনই যদি আমরা প্রস্তুতি না নিই, এই প্রজন্ম আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে।”
অজয় বাঙ্গা জানান, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ মানুষ আজকের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বসবাস করবে। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত, দক্ষ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ না দিতে পারলে সামাজিক বৈষম্য ও অস্থিতিশীলতা বাড়বে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই বার্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানকার তরুণ জনগোষ্ঠীকে শ্রমবাজারে অন্তর্ভুক্ত করাই সময়ের দাবি।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট পাঁচটি খাতকে ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের প্রধান উৎস হিসেবে উল্লেখ করেছেন— অবকাঠামো ও জ্বালানি, কৃষি ও কৃষি-ব্যবসা, স্বাস্থ্যসেবা, পর্যটন এবং খনিজ প্রক্রিয়াকরণ। তিনি বলেন, “এই খাতগুলোকে আধুনিকায়ন করে বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।”
অজয় বাঙ্গা “মিশন ৩০০” নামে একটি নতুন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যার লক্ষ্য আফ্রিকার ৩০ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা। তার ভাষায়, “বিদ্যুৎ সংযোগ মানে শুধু আলো নয়— এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির নতুন দ্বার।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন বিলিয়ন থেকে ট্রিলিয়নে যেতে চাই।” অর্থাৎ, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভর না করে নিজেদের অর্থনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
সবশেষে অজয় বাঙ্গা বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন ও সুশাসন— এগুলো কোনো এক দেশের সমস্যা নয়; এটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। তাই এখনই একসঙ্গে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।”