মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সতর্ক করে বলেছেন, ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটের পশ্চিম তীর দখলের পদক্ষেপ গাজায় যুদ্ধ অবসানের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চলা শান্তি চুক্তিকে গুরুতর হুমকির মুখে ফেলতে পারে। বুধবার (২২ অক্টোবর) ইসরাইল সফরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যে স্পষ্ট করেছেন যে এমন কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করবে না। এটি গাজা শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য হুমকিস্বরূপ।”
এর আগের দিন (২১ অক্টোবর) নেসেট অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দেয়। ১২০ সদস্যের সংসদে ২৫–২৪ ভোটে পাস হওয়া এই বিল আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার দল লিকুদ পার্টির বিরোধিতা সত্ত্বেও বিলটি পাস হয়। এখন এটি আরও আলোচনার জন্য নেসেটের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে যাবে।
এক মাস আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম তীর দখলের অনুমতি দেবে না। কিন্তু তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের ইসরাইল সফরের সময়েই বিলটি অনুমোদিত হওয়ায় ওয়াশিংটনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, অধিকৃত পশ্চিম তীর সংযুক্ত করার অর্থ হলো জাতিসংঘের প্রস্তাবিত দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনা পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়া।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “জেরুজালেম, গাজা ও পশ্চিম তীর একটি অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড—এর ওপর ইসরাইলের কোনো অধিকার বা সার্বভৌমত্ব নেই।” হামাস এই পদক্ষেপকে দখলদারিত্বের নগ্ন উদাহরণ বলে আখ্যা দিয়েছে।
কাতার, সৌদি আরব ও জর্ডানও কঠোর ভাষায় বিলটির নিন্দা জানিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি “ফিলিস্তিনি জনগণের ঐতিহাসিক অধিকার লঙ্ঘনের প্রকাশ্য প্রমাণ।” সৌদি আরব জানিয়েছে, তারা দখলদার ইসরাইলের যেকোনো বসতি সম্প্রসারণ ও দখলদারী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। জর্ডানের মতে, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ১৯৬৭ সালের সীমারেখার ভিত্তিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকারকে সরাসরি আঘাত করছে।