মিয়ানমারের সামরিক জান্তার আয়োজিত আসন্ন নির্বাচনের বিরোধিতা করে এটি ঠেকাতে জাপানকে নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের ১৭০টিরও বেশি নাগরিক সংগঠন। তাদের দাবি, এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক নয়; বরং সহিংসতা, দমন-পীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথকে আরও শক্তিশালী করবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যায় মধ্যাঞ্চলীয় চাউং উ শহরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উৎসব চলাকালীন সময়েই জান্তা-বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। ঠিক তখনই সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় বহু মানুষ হতাহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, যা মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র আরও গভীর করেছে।
এদিকে, কারেন রাজ্যে সরকারি বাহিনী প্রতিরোধ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা লে কে কাও শহরের অংশ পুনর্দখল করেছে। থাইল্যান্ড সীমান্তের মিয়াওয়াড্ডির কাছাকাছি এই এলাকাটি এখন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
মনল্যান্ড মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন, কারেন ও তানিনথারই অঞ্চলে অন্তত ১৮ নারী নিহত, ৫৩ জন আহত, এবং ২৮ জন নারীকে আটক করেছে জান্তা বাহিনী। নিহত শিশুদের সংখ্যা ১৫, আহত অন্তত ২৭ জন। অধিকাংশ হামলাই ঘটেছে যুদ্ধবিহীন অঞ্চলে।
এই পরিস্থিতিতে ১৭০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক নাগরিক সংগঠন ৬ অক্টোবর এক খোলা চিঠিতে জানায়, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার চেষ্টা করছে। তারা বলেছে,
“রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি না দিয়ে, বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা ও সহিংসতা চালিয়ে যে নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে—তা গণতন্ত্র নয়, বরং ‘ভুয়া বৈধতা’ তৈরির প্রক্রিয়া।”
চিঠিতে জাপানকে আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এই নির্বাচন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় এবং মিয়ানমারের জান্তা শাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয়।
Leave a Reply