জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ন্যাটো বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আগ্রাসন চালালে তার “কঠোর জবাব” দেওয়া হবে।
ল্যাভরভ দাবি করেন, মস্কোর পশ্চিমা দেশগুলো আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে উসকানি বা হামলার চেষ্টা হলে রাশিয়া প্রস্তুত আছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, ইউরোপে সাম্প্রতিক ড্রোন ও যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশের পেছনে রাশিয়া রয়েছে। তার মতে, এসব ঘটনার মাধ্যমে মস্কো ইউরোপীয় সমাজে ভয় সৃষ্টি করতে চাইছে, যাতে জনগণ ইউক্রেনকে সহায়তা অব্যাহত রাখা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
রাশিয়া অবশ্য পোল্যান্ড ও এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। একইভাবে ডেনমার্কের বিমানবন্দরে অজ্ঞাত ড্রোনের ঘটনাতেও কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি মস্কোর।
জাতিসংঘে দেওয়া বক্তব্যে ল্যাভরভ পশ্চিমাদের সমালোচনা করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আশার কথাও জানান। তিনি বলেন, “রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে বিশ্বকে নতুন যুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত রাখার।” আলাস্কায় সাম্প্রতিক বৈঠকের পর থেকে মস্কো এখনো সংলাপের সুযোগ দেখছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের ভূখণ্ড পুনর্দখলের পক্ষে সুর তুলেছিলেন। যদিও এর আগে তিনি কিয়েভকে ছাড় দিতে বলেছিলেন।
রাশিয়ান সেনারা দাবি করেছে, পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের ডেরিলোভে ও মাইস্কে গ্রাম এবং দ্নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের স্তেপোভে বসতি তাদের নিয়ন্ত্রণে গেছে।
অন্যদিকে ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার চুভাশিয়া অঞ্চলের একটি তেল পাম্পিং কেন্দ্রে সফল ড্রোন হামলা চালিয়েছে। কিয়েভের দাবি, এসব স্থাপনা রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে।
শুক্রবার রাতে রাশিয়ার এক হামলায় ইউক্রেনের খেরসন অঞ্চলে একজন নিহত ও অন্তত ১২ জন আহত হয়। পাশাপাশি ওডেসা অঞ্চলের রেললাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলেনস্কি জানান, তার দেশ ইতিমধ্যেই ইসরায়েল থেকে একটি মার্কিন তৈরি প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পেয়েছে এবং আরও দুটি শিগগিরই পৌঁছাবে।
চার দিন ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে রাশিয়ান অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। যদিও রিয়্যাক্টরগুলো বন্ধ রয়েছে, তবু শীতলীকরণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন। এই দীর্ঘতম বিভ্রাট নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছে রাশিয়া ও ইউক্রেন।
সূত্র: আল জাজিরা
Leave a Reply