গাজার শেষ কার্যকর হাসপাতালগুলোর কাছাকাছি নতুন করে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) একদিনেই অন্তত ৮৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
আল-শিফা হাসপাতালের বাইরে ইসরায়েলি হামলায় ১৫ জন নিহত।
আল-আহলি হাসপাতালের কাছে আরও ৪ জন প্রাণ হারান।
শিশুদের জন্য নির্ধারিত আল-রান্তিসি হাসপাতালও একাধিকবার বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে। এতে ৪০ জন রোগী পালাতে সক্ষম হলেও আরও ৪০ জন চিকিৎসক ও শিশুর সঙ্গে ভেতরে আটকে পড়েছেন।
হামাস এই হামলাকে “পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধাপরাধ” আখ্যা দিয়েছে। তাদের দাবি, জাতিসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদনে গাজায় গণহত্যার প্রমাণ প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই হামলা চালানো হলো।
ডক্টরস উইদআউট বর্ডারস (MSF)-এর নার্স হুসেইন আলনাজ্জার, যিনি তিন সন্তানের জনক ছিলেন, ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য খাতকে ধ্বংস করে তোলার এই প্রক্রিয়াকে “মেডিসাইড” বলা হচ্ছে—যেখানে হাসপাতাল, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার নিহতদের মধ্যে অন্তত ৬১ জন গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন। এখানে ইসরায়েলি সেনারা স্থল অভিযানের পাশাপাশি ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনী দিয়ে বোমাবর্ষণ চালাচ্ছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় একে “জাতিগত নিধনের সমতুল্য” বলে নিন্দা জানিয়েছে।
শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে এক মা ও তার শিশুসহ বহু পরিবার নিহত হয়েছে। এদিকে ইসরায়েল ঘোষিত দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি “নিরাপদ এলাকা”ও এখন হামলার মুখে, যেখানে খাদ্য, পানি ও স্বাস্থ্যসেবার চরম অভাব দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘ সতর্ক করে জানিয়েছে, উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ তীব্র আকার ধারণ করছে। ১২ সেপ্টেম্বর জিকিম সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানকার জনগণ কার্যত ত্রাণবিহীন অবস্থায় রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৬৫ হাজার ৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন আহত হয়েছেন। হাজারো মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
Leave a Reply