আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য কুনার প্রদেশে ৬ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের বিভীষিকা নেমে এসেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ১৪১১ জন নিহত এবং ৩১২৪ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অসংখ্য মানুষ চাপা পড়ে আছে, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পে নিহত অনেকের মরদেহ দুর্গম এলাকা থেকে নিচে আনা সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে সেসব লাশ পাহাড়চূড়াতেই দাফন করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নাসরাল্লাহ খান জানান, তিনি একাই ৫টি লাশ দাফন করেছেন—যার মধ্যে ছিল তিন শিশু ও দুই তরুণ।
নাসরাল্লাহর ভাষায়, “এখানে আসার পরই দেখা হলো এক ব্যক্তির সঙ্গে, যিনি তার পরিবারের ১৮ জনকে হারিয়েছেন। চারদিকে আহত ও মৃতরা মাটিতে পড়ে ছিল। দাফনে সাহায্য করার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি।”
ভূমিকম্পের পর মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আরও একটি ৫.২ মাত্রার আফটারশক আঘাত হানে। এতে ভীতসন্ত্রস্ত মানুষজন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। উদ্ধারকাজে নেমে আসা স্থানীয়রা খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ টেনে তুলছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কিছু গ্রামে প্রতি পরিবারে মাত্র দুই থেকে তিনজন বেঁচে আছে, বাকিরা সবাই মারা গেছে। ধসে পড়া ঘরবাড়ি থেকে মরদেহগুলো বের করে বেত দিয়ে তৈরি স্ট্রেচারে বহন করা হচ্ছে। কম্বলে মোড়ানো সেই লাশ পাহাড়ের চূড়াতেই তাড়াহুড়ো করে মাটিচাপা দিতে হচ্ছে আফটারশকের ভয়ে।
ভূমিকম্পের তিন দিন পরেও পাহাড়ি প্রত্যন্ত এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি। ফলে জীবিত উদ্ধারের আশা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। স্থানীয়রা বলছেন, অনেক গ্রাম এখনো সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত।
Leave a Reply