বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আজ দলীয় জাতীয় মহাসমাবেশে স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে তারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সরকারি সুবিধাভোগের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে সেবামূলক রাজনীতির পথেই হাঁটবে।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে বিকেলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জামায়াত আমির। তবে বসেই তিনি বক্তব্য চালিয়ে যান এবং বলেন, “আল্লাহ যত দিন হায়াত দিয়েছেন, মানুষের অধিকার ও মুক্তির জন্য লড়াই করে যাব। জামায়াতে ইসলাম যদি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে মালিক নয়, সেবক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে।”
তিনি আরও বলেন, সংসদে নির্বাচিত হলে দলীয় সংসদ সদস্যরা সরকারি প্লট বা ট্যাক্স-ফ্রি গাড়ি গ্রহণ করবেন না এবং সরাসরি কোনও আর্থিক লেনদেনেও অংশ নেবেন না। সরকারি অর্থের ব্যবহার হলে সে কাজের বিস্তারিত রিপোর্টও সময়মতো দিতে হবে।জামায়াত আমির বলেন, “চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি করব না। অন্য কাউকে চাঁদা দিতেও দেব না। দুর্নীতি সহ্য করব না। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষ ইনসাফ পাবে এবং মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারবে।”
তিনি যুব সমাজের উদ্দেশে বলেন, “আমি আজ এখানে জামায়াতের আমির হিসেবে নয়, বরং ১৮ কোটি জনগণের একজন প্রতিনিধি হিসেবে কথা বলতে এসেছি। আমি শিশুদের বন্ধু, যুবকদের ভাই, বয়স্কদের সহযোদ্ধা, এবং নারীদের ভাই। আমি তাদের মুক্তির জন্যই আজ এই মঞ্চে দাঁড়িয়েছি।”তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের পল্টন ট্র্যাজেডি, শাপলা চত্বর, পিলখানাসহ সাম্প্রতিক আন্দোলনের শহীদদের কথা স্মরণ করে বলেন, “এই শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। তাদের আত্মত্যাগের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে, পুরনো ধাঁচে বাংলাদেশ চলতে পারে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যারা বস্তাপচা ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চান, তারা যেন শহীদদের জীবন ফিরিয়ে দেন। যেহেতু পারবেন না, সেহেতু নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতেই হবে।”জাতীয় ঐক্যের বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “যে সুবিধা আমরা আজ পেয়েছি, তা ত্যাগের বিনিময়ে এসেছে। অহংকার নয়, বিনয়ের মাধ্যমে চলি। অন্য দলকে তুচ্ছ ভাবার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে না এলে, তা ফ্যাসিবাদে পরিণত হতে পারে।”
Leave a Reply