বাংলাদেশ সরকার চীনে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) প্রথম আন্তর্জাতিক অফিস স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যা হবে বৈদেশিক বিনিয়োগ আহরণে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে আয়োজিত বিনিয়োগ সেমিনারে এ তথ্য জানিয়েছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তাঁর ভাষায়, “চীনের বাজারে আমাদের শক্ত উপস্থিতি তৈরি করাই এখন সময়ের দাবি।”
সেমিনারে উপস্থিত বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে চীনের ২০টি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার সম্মিলিত প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, চীন-বাংলাদেশ-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় ফোরামের আলোচনা চলছে, যা নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার অংশ। “এই উদ্যোগ অন্য কোনো দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত নয়,” বলেন ইয়াও।
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের কারণে চীন বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অন্যতম ভুক্তভোগী দেশ। তবু রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আশাবাদী, বাংলাদেশের ভূকৌশলগত অবস্থান ও উৎপাদন সক্ষমতা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি বিকল্প পথ দেখাবে।
বিডার চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের দক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক শ্রমশক্তিকে চীনের বৈশ্বিক উৎপাদন চেইনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এতে উভয় পক্ষই উপকৃত হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “চীনের মতো বিশাল বিনিয়োগ উৎসের সঙ্গে সরাসরি বিডার সংযোগ প্রতিষ্ঠা দেশের শিল্পায়ন ও রপ্তানি বৈচিত্র্যে বড় ভূমিকা রাখবে।”
বিনিয়োগকারীদের সরাসরি তথ্য ও সহায়তা প্রদান
বাংলাদেশের ইমেজ ও সম্ভাবনা তুলে ধরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে
পিপিপি প্রকল্পে চীনা অংশগ্রহণ বাড়ানো
টেকসই শিল্প গড়ে তুলতে প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং দক্ষতা উন্নয়ন
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অফিস খোলা হলে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ (BRI) উদ্যোগের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযুক্তি আরও জোরালো হবে। সেই সঙ্গে ঢাকা-বেইজিং কৌশলগত অংশীদারত্বও পাবে নতুন মাত্রা।চীনে বিডার অফিস খোলা হলে এটি শুধু বিনিয়োগ আহরণ নয়, বরং বাংলাদেশের বৈদেশিক অর্থনীতিকে একটি নতুন ভূরাজনৈতিক ফ্রেমওয়ার্কে প্রবেশ করাবে।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ চীনা বাজারে নিজেদের প্রোফাইল জোরদার করতে সক্ষম হবে, যা উন্নয়নশীল অর্থনীতির ভবিষ্যৎ কৌশলের অংশ হয়ে উঠতে পারে।
Leave a Reply