ইসরাইলি সামরিক বাহিনী গাজার একটি জনপ্রিয় সমুদ্রতীরবর্তী ক্যাফেতে যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত ৫০০ পাউন্ড (প্রায় ২৩০ কেজি) ওজনের এমকে-৮২ বোমা ব্যবহার করেছে—যা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
সোমবার (১ জুলাই) পশ্চিম গাজার আল-বাকা ক্যাফেতে চালানো এই হামলায় অন্তত ২৪ জন নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষ নিহত হন, যাদের মধ্যে রয়েছেন নারী, শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, যুদ্ধ সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, সতর্কতা ছাড়াই চালানো এ হামলা ছিল ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ, অবৈধ এবং নির্বিচার’, যা জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের শামিল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) বলছে, তারা আকাশপথে নজরদারি করে ঝুঁকি হ্রাসের চেষ্টা করেছে। তবে, তারা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি—এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ঠিক কী ছিল। অথচ হামলার সময় ওই এলাকায় ছিল গ্রাহকে ঠাসা একটি ক্যাফে, যা ছিল সাংবাদিক, অধিকারকর্মী ও সাধারণ বাসিন্দাদের নিয়মিত আড্ডাস্থল।
গার্ডিয়ান-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে স্পষ্টভাবে MK-82 বোমার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এ ধরনের বোমা ব্যবহার একটি ব্যাপক বিস্ফোরণ তরঙ্গ সৃষ্টি করে, যার ফলে বিস্তৃত এলাকায় প্রাণহানি ঘটে।
হামলায় নিহতদের মধ্যে আছেন:
ইসমাইল আবু হাতাব, প্রখ্যাত যুদ্ধ সাংবাদিক ও ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা
একজন ৩৫ বছর বয়সী গৃহবধূ
৪ বছর বয়সী শিশু
এই হামলায় আরও অনেক মানুষ গুরুতর আহত ও পঙ্গু হয়েছেন বলে জানাচ্ছে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর জ্যেষ্ঠ গবেষক গেরি সিম্পসন বলেন,
“আইডিএফ স্পষ্ট জানত, হামলার সময় সেখানে বেসামরিক লোকজন ছিলেন। এর পরও একটি জনাকীর্ণ স্থানে ৫০০ পাউন্ড বোমা ফেলা একটি স্পষ্ট বেআইনি, অসামঞ্জস্যপূর্ণ আক্রমণ। এই ঘটনা অবশ্যই যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্তযোগ্য।”
Leave a Reply