মাদারীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অভ্যন্তরীণ বিরোধ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার জেরে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মাদারীপুর জেলা ও সদর উপজেলা সমন্বয় কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দুই নেতা—আব্দুল্লাহ আদিল মাহমুদ টুটুল ও রাতুল হাওলাদারকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে মাদারীপুর শহরের বাদামতলা এলাকার ভূঁইয়া কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এক কর্মী সভা ঘিরে। সভা শুরুর আগেই মাসুম বিল্লাহর ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। অভিযোগ উঠেছে, জেলা কমিটির সদস্য টুটুল ও রাতুলের নেতৃত্বে এই হামলা সংঘটিত হয়। মাসুমকে ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে পাঠানো হয় ঢাকায়।
এই ন্যক্কারজনক ঘটনার পরপরই এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দফতর) সালেহ উদ্দিন সিফাত ফেসবুকের মাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কমিটি স্থগিতের ঘোষণা দেন। এর আগে রাত ১টার দিকে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নির্দেশে দুই নেতাকে সব সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়। কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহও এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দেন।
জানা গেছে, এনসিপির ৩১ সদস্যের জেলা কমিটি গঠনের পর থেকেই অভ্যন্তরীণ বিরোধ দানা বাঁধে। মাসুম বিল্লাহ, নেয়ামত উল্লাহসহ অনেকেই ওই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেন। পাল্টা হিসেবে তারা সদর উপজেলায় পৃথক ২৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। এ নিয়ে দল ভেতরেই সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব, যার ফলশ্রুতিতে ঘটে এই সহিংস ঘটনা।
এ ঘটনায় মাসুমের সহকর্মী আকাশ মাতুব্বর বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। তবে হামলার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। আহত মাসুম বিল্লাহর সহযোদ্ধারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আদিল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Leave a Reply