মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা এক নতুন ও বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ণ চারটি স্থানে আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে একটি হলো দক্ষিণাঞ্চলের সোরোকা মেডিকেল সেন্টার। একই সময়ে, ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ‘আরাক হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টর’–এ আঘাত হানে, যা ইরানের পরমাণু কর্মসূচির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত।
সামরিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ইরানের এই পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ছিল সাম্প্রতিক ইতিহাসে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সামরিক সংঘাতগুলোর একটি। আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টা আগেই ইসরায়েল আরাক চুল্লিতে বিমান হামলা চালায়। এই পাল্টা পদক্ষেপে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি এখনো মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিবেচনা করছেন। এর ফলে বোঝা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলেও এখনো সরাসরি হস্তক্ষেপে নামেনি।
এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালালে এর “গম্ভীর ও অপূরণীয় পরিণতি” হবে।
এই চলমান সংঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। ইসরায়েলি হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত ২৪০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭০ জন নারী ও শিশু। অপরদিকে ইরানের হামলায় অন্তত ২৪ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫৫,৪৯৩ জন নিহত হয়েছেন এবং ১,২৯,৩২০ জন আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। অন্যদিকে, ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হন ১,১৩৯ জন, এবং ২০০-এর বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়।
পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি হামলা এবং পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ—এই সংকটকে একটি বড় পরমাণু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বিশ্ব শক্তির হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
Leave a Reply