ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ-পানিতে নতুন করে যুদ্ধাবস্থা তৈরির শঙ্কা বাড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড’ এখন ভূমধ্যসাগর অভিমুখে যাত্রার জন্য প্রস্তুত।
সূত্র জানায়, ১,১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের পারমাণবিক শক্তিচালিত এই যুদ্ধজাহাজটি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় মোতায়েন করা হবে। এর আগেই অঞ্চলটিতে অবস্থান করছে ইউএসএস কার্ল ভিনসন, এবং আরও একটি ক্যারিয়ার ইউএসএস নিমিৎজ ইতোমধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে পাঠানো হচ্ছে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে স্পষ্ট হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে ঘিরে একটি কৌশলগত সামরিক বলয় গড়ে তুলছে। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত মোতায়েন, তবু সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষ, ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা, এবং খামেনিকে হত্যার হুমকি সংক্রান্ত ট্রাম্পের বার্তা—সব মিলিয়ে এই সিদ্ধান্তকে নিছক রুটিন তৎপরতা হিসেবে দেখছেন না বিশ্লেষকরা।
এছাড়া, বাহরাইনের মার্কিন নৌঘাঁটি থেকে আরও কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ রওনা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পোস্ট। যা ইঙ্গিত দেয়, মার্কিন নৌবাহিনী ইতোমধ্যেই ইরানের চারপাশ ঘিরে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ শুরু করেছে।
এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন বা মোতায়েনের অপেক্ষায় থাকা তিন মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার:
USS Gerald R. Ford
USS Carl Vinson
USS Nimitz
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তিন ক্যারিয়ার মোতায়েন হলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, গোয়েন্দা নজরদারি, ড্রোন অপারেশন ও পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো সরাসরি ইরান যুদ্ধের অংশ হয়নি, তবে এমন শক্তি প্রদর্শন এক ধরনের ‘প্রক্সি ওয়ার প্রেসার ট্যাকটিকস’, যেখানে ইসরায়েল মূল অ্যাক্টর হলেও যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে কৌশলগত সহায়তাকারী ভূমিকায়।
বিশেষ করে, ট্রাম্পের ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণ’ দাবি, এবং ‘খামেনি লুকিয়ে কোথায় আছেন, আমরা জানি’—এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট, সিএনএন
Leave a Reply