বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) পরবর্তী তিন আসরের ফাইনাল আয়োজন নিয়েও পিছিয়ে পড়ল ভারত। আইসিসির নিরপেক্ষ ভেন্যু নীতির কারণে ভারতের দীর্ঘদিনের চাপ ও আবদারকে একপ্রকার বাতিল করে পরবর্তী তিন ফাইনালের জন্যও ইংল্যান্ডকেই বেছে নিচ্ছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম The Telegraph জানিয়েছে, ২০২৭, ২০২৯ এবং ২০৩১ সালের ফাইনাল আয়োজনের জন্য ইংল্যান্ডকেই চূড়ান্তভাবে এগিয়ে রেখেছে আইসিসি। এরই মধ্যে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ECB) সম্ভাব্য ভেন্যু নির্ধারণে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু করে দিয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসছে জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরে আয়োজিত আইসিসির বার্ষিক সভায়।
ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই গত কয়েক বছর ধরেই দাবি করে আসছিল যে, অন্তত একটি ফাইনাল ভারতে আয়োজন করা উচিত। বিশেষ করে জয় শাহ আইসিসিতে শক্তিশালী অবস্থানে যাওয়ার পর ভারতীয় ক্রিকেট মহল আশা করছিল, তাদের দাবি এবার পূরণ হবে। তবে সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
অনেকের মতে, ইংল্যান্ডে ভারতের টেস্ট রেকর্ড অনুজ্জ্বল হওয়ায় এই ভেন্যু নিয়ে ভারতীয়দের আগ্রহ কম। আবার কিছু সমালোচক বলছেন, টানা ইংল্যান্ডে আয়োজন হওয়াটা আসরের নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে পারে।
আইসিসির বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ইংল্যান্ডকেই বারবার ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়ার পেছনে রয়েছে কিছু কৌশলগত ও বাস্তব কারণ। যেমন:
দর্শকসংখ্যা: এ বছরের ফাইনালের প্রথম তিন দিনে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ৭৫ হাজারের বেশি দর্শক।
আবহাওয়া ও অবকাঠামো: জুন মাসে ইংল্যান্ডের আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল ও খেলাধুলার অনুকূল।
টাইম জোন সুবিধা: আন্তর্জাতিক সম্প্রচারের জন্য সময় সুবিধাজনক।
সংস্কৃতির বৈচিত্র্য: ব্রিটেনে বসবাসরত নানা সংস্কৃতির মানুষের কারণে আইসিসি সব দলের সমর্থকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা এড়ানো: ভারত-পাকিস্তানের চলমান বৈরি সম্পর্কের কারণে যদি ফাইনালে পাকিস্তান উঠে, তবে আয়োজনে জটিলতা তৈরি হতে পারে ভারতে।
তিন ফাইনালের পূর্ব ইতিহাস
২০২১ – সাউদাম্পটন (নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত)
২০২৩ – ওভাল (অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত)
২০২৫ – লর্ডস (ফাইনাল সম্পন্ন)
তিন আসরেই ফাইনাল হয়েছে ইংল্যান্ডে। এবং এখন দেখা যাচ্ছে, ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
বিশ্ব ক্রিকেটে শক্তিধর হলেও রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় ভারত এবারও পেছনে পড়ে গেল আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে। এদিকে, নিরপেক্ষতা ও দর্শকবান্ধব ব্যবস্থার কারণে ইংল্যান্ড ফাইনাল আয়োজনের নির্ভরযোগ্য ভেন্যু হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে স্থায়ীভাবে।
Leave a Reply