মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ছায়া ঘনীভূত হতেই সামনে এলেন ভ্লাদিমির পুতিন। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে শান্তি ফিরিয়ে আনতে দুই পক্ষকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
গত শুক্রবার (১৩ জুন) পৃথক টেলিফোন আলোচনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন ভ্লাদিমির পুতিন। এই আলোচনার কথা ক্রেমলিন নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা অনুযায়ী, ইসরাইলের হামলায় নিহত ইরানিদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে পুতিন বলেন, “এই ধরণের হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন।” তিনি আরও জানান, রাশিয়া রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পক্ষে এবং তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনার পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে মস্কো।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন স্পষ্টভাবে বলেন, “ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বের কূটনৈতিক সমাধান এখন সময়ের দাবি।” শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি। মস্কো জানিয়েছে, প্রয়োজনে রাশিয়া মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত।
রাশিয়ার এই হস্তক্ষেপের প্রেক্ষাপট রক্তাক্ত। শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ইরানের একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালায়, যাতে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন।
জবাবে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ইরান ছুড়ে দেয় কয়েকশ’ ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো ইসরায়েলের বহু অঞ্চল কাঁপিয়ে দেয়। এ হামলায় ৩ জন নিহত এবং অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি ও যানবাহন।
রাশিয়ার এই মধ্যস্থতার প্রস্তাব কেবল যুদ্ধ বন্ধের বার্তাই বহন করছে না, বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারে মস্কোর কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের ছায়া এড়িয়ে এই সংঘাতে রাশিয়ার সরাসরি ভূমিকা নেওয়া এক নতুন ভূ-কৌশলগত ধাপ।
Leave a Reply