নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যের মোকওয়া শহরে প্রবল বৃষ্টিপাতের পর সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ১৫১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে এবং আবহাওয়া বিভাগ আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।
নাইজার স্টেট ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (NSEMA) মুখপাত্র ইব্রাহিম আওদু হুসেইনি জানান, বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টির ফলে মোকওয়া শহর ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৩,০১৮ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ২৬৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। উদ্ধারকারীরা প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে আরও মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে অনেকেই বন্যার পানির তোড়ে নাইজার নদীতে ভেসে গেছেন।
রাষ্ট্রপতি বোলা আহমেদ টিনুবু এই দুঃখজনক ঘটনার প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে জানান, সেনাবাহিনীসহ দেশের নিরাপত্তাবাহিনী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করছে।
“ত্রাণ সামগ্রী ও অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা দ্রুততার সঙ্গে পাঠানো হয়েছে,” তিনি সামাজিক মাধ্যমে লেখেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিবার ও সম্পত্তি—সবকিছু হারিয়ে তারা দিশেহারা।
মোহাম্মদ টাঙ্কো নামে এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা ১৫ জন হারিয়েছি এই একটি বাড়ি থেকেই। সব শেষ।”
আরেকজন বলেন, “আমি শুধু রাতের পোশাক পরে পালাতে পেরেছি। এখন বুঝতেও পারছি না আমাদের ঘর কোন দিকে ছিল।”
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনে আরও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে অতিরিক্ত বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা এই ধরণের দুর্যোগের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তন, অবৈধ নির্মাণ এবং অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন।
“আগে যে পরিমাণ বৃষ্টি পুরো বছরে হতো, এখন সেটা এক-দুই মাসেই হচ্ছে,” বলেন উগোন্না এনকুননও, ইউনিভার্সিটি অব নাইজেরিয়ার বন্যা বিশ্লেষক। “মানুষ এই রকম প্রবল বৃষ্টির জন্য প্রস্তুত নয়।”
২০২৪ সালে এমন বন্যায় ১,২০০ জনের বেশি মারা যান এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঘর হারান।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (NEMA) বলেছে, পানি চলাচলের পথে বাড়ি নির্মাণ বন্ধ করা এবং ড্রেন ও নদীপথ পরিষ্কার রাখা এখন অতি জরুরি।
Leave a Reply