গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলের চলমান সামরিক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে চলেছে। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর সফর করতে যাচ্ছেন—৫৮ বছরের মধ্যে এই প্রথম এমন উচ্চপর্যায়ের কোনও সৌদি কর্মকর্তা পশ্চিম তীরের মাটি ছুঁতে যাচ্ছেন।
ফিলিস্তিন দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১ জুন) একটি আরব মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদল রামাল্লায় পৌঁছাবে, যেখানে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এই সফর ঘিরে বিরোধিতা জানিয়েছে ইসরাইল। এক সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে আয়োজিত এই সফরের সঙ্গে ইসরাইল ‘সহযোগিতা করবে না’, কারণ এটি উসকানিমূলক পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, পশ্চিম তীরের প্রবেশাধিকার ইসরাইলের হাতে, তাই মন্ত্রীদের রামাল্লায় প্রবেশে তাদের অনুমোদন প্রয়োজন।
সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, এই সফরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, জর্ডান, কাতার ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা থাকতে পারেন। সফরটির মূল উদ্দেশ্য হলো, গাজায় মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি আরব বিশ্বের সমর্থনকে জোরালোভাবে তুলে ধরা।
সৌদি আরবে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত মাজেন ঘোনেইম বলেন, “এই সফরটি একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—ফিলিস্তিনি ইস্যু এখনো আরব ও মুসলিম বিশ্বে কেন্দ্রীয় এজেন্ডা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য কেবল মানবিক সহানুভূতি নয়, বরং রাজনৈতিক সমর্থনের নতুন মাত্রা তৈরি করা।”
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত বিশ্লেষক টি-পলিটোগ্রাফির প্রধান শাউল আরিলি বলেন, ১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর দখলের পর এই সফরটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলোর একটি।
“এই সফরটি প্রমাণ করে যে, সৌদি আরব এখন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছে, যা গাজা যুদ্ধের শুরুর পর একটি দৃশ্যমান কৌশলগত পালাবদল,” বলেন আরিলি।
তিনি আরও যোগ করেন, “সৌদি আরব স্পষ্ট বলেছে যে তারা ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে, এবং এই সফর সেই বার্তাকে জোরালো করছে।”
Leave a Reply