প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বজ্রপাত যেন মৃত্যুর মিছিল হয়ে নেমে আসে বাংলাদেশের আকাশে। গড় হিসেবে প্রতি বছর প্রায় ৩০০ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে বজ্রপাত, যার ৭০ শতাংশই কৃষক—বলছে বেসরকারি সংস্থা ডিজাস্টার ফোরাম। আর এই সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছেই।
বাংলাদেশে ২০১০ থেকে ২০২৪—এই ১৪ বছরে বজ্রপাত প্রাণ কেড়েছে ৪ হাজার ১৫৭ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বনভূমি ধ্বংস এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারানোর কারণেই বজ্রপাতের ঝুঁকি দ্রুত বেড়ে চলেছে।
হাওর, চরাঞ্চল ও খোলা মাঠে কাজ করা কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি বিপদে। বিশেষ করে বোরো মৌসুমে (এপ্রিল-জুলাই) কৃষি নির্ভর পরিবারগুলো বজ্রপাতের সময় প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে মাঠে নামতে বাধ্য হন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বজ্রপাত প্রবণ এই চার মাসে মোবাইল অ্যালার্ট মেসেজ পাঠানো হয় নিয়মিত।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—
“যাদের মধ্যে অনেকেই নিরক্ষর, তারা এই বার্তা কতটা বোঝেন?”
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন,
“বজ্রপাতের সময় অপ্রয়োজনে বাইরে না যেতে হবে। বেশি বজ্রপাত হলে সবাইকে এক ঘরে না থেকে আলাদা থাকতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন বলছেন—
“গ্রামীণ কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তাই প্রচারণা আরও জোরদার করতে হবে। বজ্রনিরোধক যন্ত্র (Lightning Arrester) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা দরকার।”
এদিকে, ইতোমধ্যেই সুনামগঞ্জে (দেশের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চল) বজ্রনিরোধক প্রযুক্তি স্থাপন শুরু হয়েছে। তবে, এই প্রযুক্তির ব্যবহার এখনো সীমিত।
🔹 বজ্রনিরোধক প্রযুক্তি (Lightning Arrester) প্রতিটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় স্থাপন
🔹 অক্ষরজ্ঞানহীন জনগণের জন্য ভিজ্যুয়াল ও মৌখিক সতর্কতা বার্তা চালু
🔹 কৃষিপ্রধান এলাকাগুলোতে প্রচারণা বাড়ানো
🔹 দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি
🔹 বজ্রপাতের সময় আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থা ও নিরাপদ ঘর নিশ্চিতকরণ
Leave a Reply