সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অফিস স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তিনি এর আগে কখনও প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হননি এবং গত সপ্তাহের আগ পর্যন্ত এমন কোনো রোগ শনাক্ত হয়নি। ক্যান্সার গোপনের অভিযোগ এবং বিতর্কের মুখে মঙ্গলবার তারা এই ব্যাখ্যা দিয়েছে।
বিডেনের দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “শুক্রবারের আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কখনো প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হননি। তার সর্বশেষ পরিচিত PSA (Prostate-Specific Antigen) টেস্ট হয়েছিল ২০১৪ সালে।”
এই মন্তব্য আসে ঠিক তখনই যখন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যান্সার শনাক্তের সময় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এত দেরি হলো কেন? এটা অনেক সময় ধরে গড়ে ওঠে। এরকম অবস্থায় পৌঁছাতে বছর লেগে যেতে পারে। কেউ সত্য গোপন করছে—এটাই বড় সমস্যা।”
গত রোববার বাইডেনের অফিস জানিয়েছিল, তার প্রোস্টেট ক্যান্সারটি ইতোমধ্যে হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ক্যান্সারটি গ্লিসন স্কোর অনুযায়ী ৯, যা এটিকে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধরনের ক্যান্সারগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত করে।
এই তথ্য প্রকাশের পর আবারও প্রশ্ন উঠেছে—ক্ষমতায় থাকাকালীন বিডেন তার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিলেন কি না।
তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য নিয়মিত প্রোস্টেট ক্যান্সার স্ক্রিনিং সাধারণত সুপারিশ করা হয় না, কারণ এতে অতিরিক্ত চিকিৎসা ও জীবনের মান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ড. অ্যাডাম ওয়েইনার, ইউরোলজিক সার্জন, Cedars-Sinai Medical Center, আল-জাজিরাকে বলেন, “বয়স বিবেচনায় এমন একজন ব্যক্তির (বাইডেন) ক্ষেত্রে নতুন করে মেটাস্টেটিক ক্যান্সার ধরা পড়া দুঃখজনক হলেও পুরোপুরি যৌক্তিক।”
প্রোস্টেট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ নিক জেমস, The Institute of Cancer Research, London, বলেন, “বিডেনের অফিস যা বলছে তা অস্বাভাবিক হলেও সম্ভব। কারণ কিছু ধরনের ক্যান্সার PSA টেস্টে ধরা পড়ে না।” তিনি আরও যোগ করেন, “এমনকি প্রোস্টেট MRI টেস্টেও ভুল রিপোর্ট আসতে পারে।”
এদিকে, বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়িয়েছে CNN-এর জেক ট্যাপার এবং Axios-এর অ্যালেক্স থম্পসনের সদ্য প্রকাশিত বই Original Sin। বইটিতে দাবি করা হয়েছে, বিডেনের শারীরিক ও মানসিক অবনতি গোপন রাখতে তার ঘনিষ্ঠরা সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে।
বইতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের এক ফান্ডরেইজিং অনুষ্ঠানে বাইডেন নাকি অভিনেতা জর্জ ক্লুনিকে চিনতেই পারেননি।
এই বিতর্কের মাঝেও বাইডেনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, তাদের কোনো কিছু গোপন করার প্রশ্নই ওঠে না এবং সব ধরনের অভিযোগ “অভিযোগ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
Leave a Reply