রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কঘিরে নতুন করে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। আগামীকাল রবিবার (১৮ মে) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
শনিবার (১৭ মে) আইএসপিআর থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচল এবং জনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে” এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিষিদ্ধ এলাকার পরিধি
নির্দেশনায় যেসব এলাকায় সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলো হলো:
🔹কচুক্ষেত সড়ক ও বিজয় সরণি হতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় পর্যন্ত এলাকা
🔹বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ জাহাঙ্গীর গেট সংলগ্ন এলাকা
🔹বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে মহাখালী ফ্লাইওভার সংলগ্ন অংশ
🔹সৈনিক ক্লাব মোড়, ভাষানটেক, মাটিকাটা ও ইসিবি চত্বরসহ তৎসংলগ্ন অঞ্চল
আইএসপিআর-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা “জননিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা” নিশ্চিত করতে জারি করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে। পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে সমন্বয়
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীর বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। ডিএমপির ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত এলাকা ও স্থাপনাগুলো ছিল:
🔸প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন ও বিচারপতি ভবন
🔸সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটক, মাজার গেট ও জামে মসজিদ গেট
🔸জাজেস কমপ্লেক্স ও বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট
🔸আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১ ও ২-এর প্রবেশপথ
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, রাজধানীতে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও জনসমাগমের আশঙ্কা থেকেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার অংশ হিসেবে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কর্মসূচি ও পাল্টা কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। জননিরাপত্তা ও চলাচলের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে প্রশাসন ও সেনা সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে এই ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, “এ ধরনের পদক্ষেপ অস্থিরতা ঠেকাতে স্বল্পমেয়াদে কার্যকর হলেও দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক সমঝোতা ও সংলাপই টেকসই সমাধান দিতে পারে।”
রাজধানীর কৌশলগত ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে জনসমাগম ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে চলাচল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। নাগরিকদের সচেতন ও সহযোগিতাপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি মসৃণভাবে পার করা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply