গাজা উপত্যকায় টানা ৭১ দিন ধরে চলা অবরোধের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। শনিবার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত স্কুলে চালানো আক্রমণে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই ছিল ঘরছাড়া সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫২,৮২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১,১৯,৫৫৪ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর নিহতের সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে, যাদের মধ্যে বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নিখোঁজ এবং মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে একটি কূটনৈতিক অগ্রগতির আভাস মিলেছে। হামাস ঘোষণা দিয়েছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলি দ্বৈত নাগরিক ইদান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেবে। একই সঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথাও নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া শনিবার, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত আরও বিস্তৃত রূপ নেয়, যখন ইসরায়েল ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী হুদায়দায় বিমান হামলা চালায়। এর আগে তারা হুথি নিয়ন্ত্রিত রাস ইসা, হুদায়দা ও সালিফ বন্দরের বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়ার জন্য সতর্ক করেছিল। হামলার প্রতিক্রিয়ায় হুথি বাহিনী পাল্টা প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে।
এই যুদ্ধের সূচনা হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে চালানো আক্রমণের মাধ্যমে। ওই হামলায় ১,১৩৯ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন এবং দুই শতাধিক মানুষ বন্দি হন, যাদের মধ্যে অনেক বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন।
সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে।
গাজার মানবিক সংকট এখন আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আবাসিক এলাকা, বেঁচে থাকা মানুষরা দুর্ভিক্ষ ও নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের মুখে চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন।
Leave a Reply