অভিজ্ঞতায় ভারী হয়ে ওঠা রাজধানীর গ্রীষ্ম—শেষ কয়েক দিন ধরে যেন উত্তাপের এক অনাহূত বন্দিত্বে ছিল ঢাকা। জনজীবন নাজেহাল, গরমে হাঁসফাঁস করা নাগরিকদের জন্য বৃষ্টি যেন হয়ে উঠেছিল একমাত্র আরাধ্য চাওয়া।
রোববার (১১ মে) সন্ধ্যার পর সেই প্রতীক্ষিত স্বস্তিই ফিরেছে রাজধানীতে। প্রথমে আকাশে গড়াগড়ি খেয়েছে কালো মেঘ, তারপর ধীরে ধীরে মিরপুরসহ কিছু এলাকায় শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। রাত আটটার পর থেকে বাড়তে থাকে বৃষ্টির পরিমাণ। সঙ্গে আসে শীতল বাতাস, যা মুহূর্তেই প্রশান্তি ছড়িয়েছে জনজীবনে।
মিরপুরের বাসিন্দা সাদিউল আলম বলেন,
“গত কয়েক দিন ঘরে থাকা দুঃসহ হয়ে উঠেছিল। এমনকি ফ্যানের হাওয়াও আগুনের মতো লাগছিল। আজকের বৃষ্টি ও ঠান্ডা হাওয়া যেন প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে।”
বিলকিস খাতুন নামে আরেক বাসিন্দা বলেন,
“গরমে ছোট ছোট বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। এখন বৃষ্টির পর পরিবেশ ঠান্ডা হওয়ায় সবাই বেশ স্বস্তি পাচ্ছে। বাচ্চারাও আনন্দে বাইরে ছুটে গেছে।”
এদিন শুধু মিরপুরই নয়, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, তেজগাঁও সহ বিভিন্ন এলাকায় বইতে দেখা গেছে হালকা ঠান্ডা বাতাস। কোথাও কোথাও ছিটেফোঁটা বৃষ্টিও মিলেছে, যা উষ্ণতা কমিয়ে এনেছে রাজধানীর ব্যস্ত বিকেলে।
এর আগে বিকেলেই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান,
“ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলাগুলোর ওপর বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে বজ্রপাতসহ হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন,
“বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রাজধানীর পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিকের উপজেলাগুলোর ওপরে।”
এ ধরনের হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি রাজধানীর জন্য সাময়িক হলেও দারুণ স্বস্তির। তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ শহরবাসীর জন্য এটি যেন প্রকৃতির পক্ষ থেকে এক শান্তিপূর্ণ বিরতি।
Leave a Reply