রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা চলমান যুদ্ধ বন্ধে এক সম্ভাব্য কূটনৈতিক মোড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। শনিবার (১০ মে) গভীর রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি জানান, “আমরা অবিলম্বে ইউক্রেনের সঙ্গে গুরুতর আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত। আলোচনা ১৫ মে থেকেই শুরু হতে পারে। আমাদের লক্ষ্য—সংঘাতের মূল কারণগুলোর সমাধান এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই শান্তির ভিত্তি তৈরি।”
এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন ইউরোপীয় নেতাদের চাপের মুখে রয়েছে মস্কো। যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে গড়ানোর প্রান্তে দাঁড়িয়ে, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালির নেতারা একযোগে ইউক্রেন সফরে গিয়ে পুতিনকে আলটিমেটাম দিয়েছেন—সোমবারের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ না হলে, আসছে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক সহায়তা।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কিয়েভে এক মঞ্চে দাঁড়ালেন ইউরোপের চার প্রধান নেতার প্রতিনিধি। সেখানে তারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যৌথভাবে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানান, এই যুদ্ধবিরতির আওতায় আকাশ, স্থল ও সমুদ্র—সব ধরনের সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
যদি মস্কো এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তবে আরও নিষেধাজ্ঞা আসবে—ব্যাংক, জ্বালানি, এবং প্রযুক্তি খাতে—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইনের ভাষায়, “মস্কো যদি এই সুযোগ হাতছাড়া করে, তাহলে ইউরোপ প্রস্তুত কঠিন অর্থনৈতিক চাপে ফেলার জন্য।”
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস সরাসরি বলেন, “যদি পুতিন আলোচনা না চান, তাহলে পশ্চিমা সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা কেবল অব্যাহতই থাকবে না, আরও জোরদার হবে।” ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কিয়েভ-মস্কোর সরাসরি সংলাপ শুরু হওয়ার পক্ষে মত দেন এবং জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে আলোচনার পথ সুগম হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার সাফ জানিয়ে দেন, “বিশ্ব শান্তির পথে একমাত্র বড় বাধা এখন রাশিয়া।”
Leave a Reply