সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বুধবার দিবাগত রাত তিনটায় গোপনে দেশ ত্যাগ করেছেন। রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাই এয়ারওয়েজের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান এবং নির্ধারিত প্রক্রিয়া শেষে রাত ৩টা ৫ মিনিটে ফ্লাইট নম্বর TG 340-এ দেশ ছাড়েন।
দেশজুড়ে আলোচিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রায় নয় মাস পর এই বিদেশ যাত্রা দেশের রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জে গত বছরের আগস্টে অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলা, গুলি ও সন্ত্রাসী তৎপরতার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতির নাম রয়েছে আসামিদের তালিকায়। ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ১২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এবং আরও ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
আবদুল হামিদ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য রাষ্ট্রনায়ক—তিনি দেশের ১৭তম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথমবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন, পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এবং ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অতীতের গৌরবময় সাংবিধানিক ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান পরিস্থিতি ও তাঁর হঠাৎ দেশত্যাগ দেশের রাজনৈতিক ও আইনি অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
দেশ ছাড়ার এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী প্রভাব ফেলবে—তা এখন সময়ই বলবে।
Leave a Reply