পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সীমান্ত পারাপার গোলাগুলিতে উভয়পক্ষেই বহু প্রাণহানির ঘটনায় পরিস্থিতি নতুন করে সংঘাতমুখী হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, “নিরীহ শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আমরা এর বদলা নেব।”
এই বক্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ ও আজাদ কাশ্মীরে ভারতীয় হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছে বলে ইসলামাবাদ দাবি করেছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, বসতবাড়ি ও মসজিদে হামলা চালিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং এটি সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার সামিল।
অন্যদিকে, ভারত জানায়, তারা “অপারেশন সিনদুর” পরিচালনা করেছে, যার লক্ষ্য ছিল “সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস”। নয়াদিল্লি দাবি করেছে, পাকিস্তান থেকে পরিচালিত হামলার জবাবে তারা এই পদক্ষেপ নেয়। ভারতের কাশ্মীর অংশে পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ১৩ জন নিহত ও আরও অনেকে আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনার পর থেকেই লাইন অব কন্ট্রোলে (LoC) একাধিক স্থানে ভারী গোলাগুলির বিনিময় চলছে। সীমান্তে টানা সংঘর্ষের ফলে অঞ্চলজুড়ে আবারও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে ২২ এপ্রিল, ভারতের পাহেলগামে, যেখানে একটি প্রাণঘাতী হামলায় ভারতীয় সেনা ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিদের দায়ী করে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এই পরিস্থিতি নিয়ে। উভয় দেশ পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়ায়, বেসামরিক হতাহতের ঘটনাগুলো পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা এখন দুই পক্ষকে শান্ত থাকতে এবং উত্তেজনা প্রশমনে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদারের আহ্বান জানাচ্ছেন, যেন এই সংঘাত আর বড় আকার ধারণ না করে।
Leave a Reply