দীর্ঘ চিকিৎসাজনিত সফর শেষে চার মাস পর ঢাকায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান দলীয় নেতাকর্মীরা। এই প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলমান নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “বেগম খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে সহজ করবে। তিনি আমাদের জাতীয় জীবনে নেতৃত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।”
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী কাতারে উন্নত চিকিৎসা শেষে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফেরেন। কাতারের আমিরের সহযোগিতায় পরিচালিত এই যাত্রায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন তার দুই পুত্রবধূ—ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
শান্তির বাসভবনে নীরব প্রত্যাবর্তন
বিকেলে ফিরে আসার পর খালেদা জিয়া কিছুটা শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করায় বর্তমানে বিশ্রামে আছেন বলে জানান দলের মহাসচিব। গুলশানের ফিরোজার নিরাপত্তা ও পরিবেশ নিশ্চিন্ত রাখতে নেতাকর্মীদের জমায়েত না হওয়ার অনুরোধও করেন তিনি।
চিকিৎসকের ভাষ্য ও নেতাদের বার্তা
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ জানান, “খালেদা জিয়া আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরেছেন। দেশবাসীর দোয়া ও চিকিৎসার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণের প্রয়োজনে বেগম জিয়া আবারও জাতীয় রাজনীতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন।”
রাস্তাজুড়ে উচ্ছ্বাস, শ্লোগানে মুখরিত ঢাকামুখী সড়ক
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথজুড়ে নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। কারও হাতে ছিল ফুল, কারও হাতে দলীয় পতাকা। খালেদা জিয়ার নামে ব্যানার ও পোস্টারে সজ্জিত পুরো পথ ছিল স্লোগানে মুখর।
বিশেষ করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সদ্য দেশে ফেরা ডা. জোবাইদা রহমানের নামে লেখা ব্যানারও ছিল দৃশ্যমান। উল্লেখ্য, প্রায় ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন ডা. জোবাইদা, স্বামীর অনুপস্থিতিতে শাশুড়ির পাশে থাকার সিদ্ধান্তে এই প্রত্যাবর্তন।
রাজনীতিতে পুনরাগমন নাকি মানবিক প্রত্যাবর্তন?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়ার এই প্রত্যাবর্তন শুধু ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়, বরং দেশের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সাম্প্রতিক সময়ে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার ইস্যুতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিএনপি এখন এই প্রত্যাবর্তনকে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছে।
Leave a Reply