দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে ৪৫০ কিলোমিটার পাল্লার ভূমি থেকে ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম আবদালি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
শনিবার (৩ মে) ‘ইনডাস্ট’ নামের একটি সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণমূলক উৎক্ষেপণ চালানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআরের ভাষ্য অনুযায়ী, উৎক্ষেপণের মূল লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুতি যাচাই, প্রযুক্তিগত সক্ষমতার মূল্যায়ন এবং কমান্ড ও কন্ট্রোল অবকাঠামোর প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ।
এই প্রশিক্ষণ তৎপরতা প্রত্যক্ষ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের কমান্ডার, প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা, এবং সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা। তাদের উপস্থিতি পুরো প্রক্রিয়াটিকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।
এই সাফল্যে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল শাহির শামশাদ মির্জা, এবং সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। তারা দেশের স্ট্র্যাটেজিক সক্ষমতার ওপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছেন এবং একে ‘ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্য প্রতিরোধ ক্ষমতা’র অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আইএসপিআর এক বিবৃতিতে বলেছে,
জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় যে কোনো বহিঃআক্রমণের জবাবে পাকিস্তান প্রস্তুত—এই বার্তা পৌঁছে দিতেই এই মহড়া।
এই উৎক্ষেপণ এমন এক সময় হলো যখন কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলায় ভারতের একাধিক নিরাপত্তাকর্মী হতাহত হয়েছেন, যা দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, আবদালি ক্ষেপণাস্ত্রের এই প্রদর্শনী একদিকে প্রশিক্ষণমূলক হলেও, অন্যদিকে গোপন কৌশলগত বার্তা বহন করে—বিশেষ করে প্রতিবেশী প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তান বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে, যার মধ্যে আবদালি নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবেই পরিচিত। এটি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম হওয়ায় এটি পাকিস্তানের পারমাণবিক নীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত।
Leave a Reply