যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মহলে বড় ধরনের ধাক্কা আসন্ন—সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে গোয়েন্দা খাতেও ব্যাপক রদবদলের পথে হাঁটছে। খরচ কমানোর নীতির অংশ হিসেবে এবার টার্গেট হয়েছে সিআইএসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অভ্যন্তরীণ কাঠামো।
ওয়াশিংটন পোস্ট-এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ থেকে প্রায় ১,২০০ কর্মকর্তা ছাঁটাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য গোয়েন্দা শাখা থেকেও হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। সিআইএ প্রধান জন র্যাটক্লিফ এই কাঠামোগত পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিশ্লেষকদের ভাষ্য, এটি কেবল একটি কর্মসংস্থান ইস্যু নয়—বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সঙ্কেত। বৈশ্বিক নিরাপত্তার চাপে যখন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কার্যক্রমের চাহিদা শীর্ষে—বিশেষ করে চীনের ক্রমাগত উত্থান, ইউক্রেন যুদ্ধ, ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে—তখন এমন ছাঁটাই গোয়েন্দা সক্ষমতাকে গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা দেখছেন বড় ধরনের রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে। দ্বিতীয় মেয়াদে বাজেট কমানোর অজুহাতে এরই মধ্যে দুই লাখেরও বেশি সরকারি কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন, যার বিস্তার এখন সুরক্ষা কাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছেছে।
এই পরিস্থিতি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর নয়, বরং বৈশ্বিক পর্যায়ে মার্কিন গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের প্রভাব ও কৌশলগত জোটের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজেদের গোয়েন্দা সক্ষমতা খর্ব করে, তবে তা তার নেতৃত্বের অবস্থানকেও দুর্বল করে তুলতে পারে—বিশেষ করে এক প্রতিযোগিতামূলক, বহুমাত্রিক নিরাপত্তা পরিবেশে।
বিশেষজ্ঞ মত অনুযায়ী, যেকোনো কাঠামোগত সংস্কার তখনই কার্যকর হয়, যখন তা হয় সুপরিকল্পিত ও সুদূরপ্রসারী কৌশলের অংশ। কিন্তু এই মুহূর্তে ট্রাম্প প্রশাসনের ছাঁটাই পদক্ষেপ একাধিক ফ্রন্টে প্রশ্ন তুলছে: এটি কি সত্যিই বাজেট রক্ষা নাকি দীর্ঘমেয়াদী গোয়েন্দা প্রভাবকে খর্ব করার এক রাজনৈতিক রণকৌশল?
Leave a Reply