গত ১১ মাসে দলের গঠনতন্ত্র ও নীতিমালার লঙ্ঘনের দায়ে প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
দলের হাইকমান্ড বারবার বললেও – “অপরাধে জড়ালে ছাড় নেই”,
তবু বারবার আলোচনায় আসছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর আচরণ।
যুবদল থেকে শুরু করে শ্রমিকদল, ছাত্রদল – একাধিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, ধর্ষণ, হামলা, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের অভিযোগ।
এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার মতো গুরুতর ঘটনাও ঘটেছে, যা দলের ভাবমূর্তি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
গত ৩০ জুন রাজধানীর মহাখালী হোটেল জাকারিয়ায় ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
বনানী থানা যুবদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মনির হোসেন প্রথমে বারে গিয়ে ‘ভিআইপি রুম’ না পেয়ে স্টাফদের গালিগালাজ করে বেরিয়ে যান।
পরদিন ২০-২৫ জন অনুসারী নিয়ে ফের বারে হামলা ও ভাঙচুর চালায় মনিরপন্থীরা।
জাকারিয়া হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার খোকন চৌধুরী বলেন,
“মনির হুমকি দিয়েই বেরিয়ে যায়। পরদিন অনুসারীরা এসে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি করে। নারীদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ওসি মো. রাসেল সরোয়ার।
২ জুলাই, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদেশে সাজাপ্রাপ্ত দুজনকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালানো হয়।
এতে থানার ওসিসহ ৮ পুলিশ সদস্য আহত হন।
অভিযোগের তীরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মীরা।
এর আগে, ২৯ জুন ভোলার তজুমদ্দিনে, এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে শ্রমিকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে।
স্বামীকে সারা রাত নির্যাতনের পর এই ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত হয়।
পরে দল থেকে ৩ জনকে বহিষ্কার করা হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এ প্রসঙ্গে বলেন—
“ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় দল নেবে না। ১১ মাসে ৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছি। এটি প্রমাণ করে, আমরা শৃঙ্খলা ভাঙার বিরুদ্ধে কঠোর।”
তিনি আরও দাবি করেন—
“একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে বিএনপিকে বিতর্কে জড়াতে চায়। অনেক সময় ছোট ঘটনাকে বড় করে তুলে ধরা হচ্ছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে,
বিএনপির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়াস ইতিবাচক হলেও ঘনঘন নেতাকর্মীদের অপরাধে জড়ানো
দলটির জনআস্থা ও ইমেজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলের এমন কর্মকাণ্ড সংগঠনিক দুর্বলতা ও নৈতিক নেতৃত্বের প্রশ্ন তোলে।
Leave a Reply