আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যত সক্রিয় হয়ে উঠেছে দেশের ইসলামী দলগুলো। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির পাশাপাশি সংস্কারের দাবি তুলে জোট গঠনের আভাস দিচ্ছে এসব দল।
নেতারা বলছেন—“সংবিধান ও নির্বাচন কাঠামোয় সংস্কার ছাড়া ভোটে অংশগ্রহণ শুধু প্রতারণার নামান্তর।” একইসঙ্গে তারা মনে করছেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার পতনের পর জুলাই গণ-অভ্যুত্থান যে গণতান্ত্রিক সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছিল, তা বেহাত হয়ে যেতে পারে যদি সঠিক রাজনৈতিক রূপরেখা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হয়।
ইতোমধ্যে ছোট-বড় ১০টির বেশি ইসলামী দল ৩০০ আসনে নির্বাচন নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছে।
কেউ প্রার্থী নির্ভর প্রচারণায় না গিয়ে সংগঠন ও আদর্শকে সামনে রেখে কাজ করছে, আবার কেউ সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে রেখেছে।
তবে, এসব দলের মূল লক্ষ্য— জোটবদ্ধ অংশগ্রহণ, যেন ইসলামী রাজনৈতিক শক্তি বৃহৎ পরিসরে প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন বলেন,
“জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জোট গঠনের চেষ্টা করছি। তবে, এর আগে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনিক কাঠামোয় দৃশ্যমান সংস্কার জরুরি। প্রয়োজনে নির্বাচন পেছালেও আপত্তি নেই।”
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন,
“আমরা ব্যক্তি নয়, দলকে গুরুত্ব দিচ্ছি। নির্বাচনের প্রস্তুতি থাকলেও এখনই প্রার্থী কেন্দ্রিক প্রচারণায় যাচ্ছি না। কারণ সংস্কার ছাড়া ভোট মানে অতীতের চক্রে ফেরত যাওয়া।”
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন,
“আমরা ৩০০ আসনের প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছি। তবে এটা এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নয়। প্রয়োজন হলে যেকোনো সময় প্রার্থী পরিবর্তন করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার যে নিরপেক্ষতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা বাস্তবে কতটা রক্ষা করতে পারবে তা এখন দেখার বিষয়।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত ছাত্র ও জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইসলামী দলগুলোর অবস্থান দৃশ্যত পাল্টেছে।
এই সুযোগে তারা রাজনৈতিক ধারা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করছে এবং মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ বলেও মন্তব্য করছে।
Leave a Reply