জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সামরিক হামলায় পরমাণু স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই আবারো সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে সক্ষম হবে।
শুক্রবার (২৭ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম CBS News-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন,
“আমি বলবো, তারা কয়েক মাসের মধ্যেই কিছু সেন্ট্রিফিউজ ঘুরিয়ে পুনরায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারবে। এমনকি সময়টা এর চেয়েও কম হতে পারে।”
গ্রোসি আরও বলেন,
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, হামলার আগে ইরান তার প্রায় ৪০৮.৬ কেজি (৯০০ পাউন্ড) উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়েছিল কিনা। আমরা জানি না এই উপাদান এখন কোথায় আছে, ধ্বংস হয়েছে নাকি সরানো হয়েছে—এ ব্যাপারে এখনো কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা নেই।”
উল্লেখ্য, এই ইউরেনিয়াম ৬০% পর্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল, যা বেসামরিক সীমার বেশি, তবে অস্ত্র গ্রেডের নিচে। তবে ৯০% পর্যন্ত পরিশোধন করলে এটি ৯টিরও বেশি পারমাণবিক বোমা তৈরির উপযুক্ত উপাদান হয়ে উঠতে পারে।
এদিকে, তেহরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাকে সহযোগিতা স্থগিতের পক্ষে ভোট দিয়েছে, এবং ফোরদো-সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সিদ্ধান্ত ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরীক্ষা প্রচেষ্টায় আরও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
গ্রোসি বলেন,
“আমাদের অবশ্যই জানতে হবে—সেখানে কী আছে, কোথায় আছে এবং কী ঘটেছে। এ বিষয়ে নিশ্চিত না হলে কোনো পদক্ষেপই নিরাপদ নয়।”
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলাকে ‘গুরুতর ক্ষতি’ বললেও বিস্তারিত কিছু জানাননি। অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন,
“এই হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে।”
তবে গ্রোসি ও আন্তর্জাতিক পরমাণু বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন এবং ইরানের পরমাণু সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।
Leave a Reply