ইরানের ভূখণ্ডে গোপন অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলের কমান্ডো বাহিনী—এমন বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির। যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গুপ্তচরবৃত্তি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান। এই প্রেক্ষাপটে দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা একাধিক ‘কৌশলগত প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা’ চালু করেছে।
বুধবার (২৫ জুন) ইসরায়েলি চ্যানেলে প্রচারিত এক টেলিভিশন ভাষণে সেনাপ্রধান ইয়াল জমির বলেন, “যুদ্ধের সময় আমাদের আইডিএফ কমান্ডোরা বিমান বাহিনী ও মোসাদের সমন্বয়ে ইরানের অভ্যন্তরে একাধিক গোপন অভিযান পরিচালনা করেছে। আমরা ইরানের আকাশসীমা এবং আমাদের নির্ধারিত টার্গেট এলাকায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলাম।” তিনি আরও দাবি করেন, “আমাদের এই এলিট ইউনিট শত্রুপক্ষের কেন্দ্রস্থলে ঢুকে অপারেশন চালিয়েছিল, যা পুরো কৌশলের অন্যতম সফল অংশ।”
এদিকে ইরানি কর্তৃপক্ষের ভাষ্য ভিন্ন। তারা বলছে, যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “ইসরায়েলি এজেন্টরা দেশজুড়ে সাধারণ নাগরিকদের ফোন করে জাতীয় তথ্য চুরি এবং বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে। সামাজিক অস্থিরতা উসকে দেয়ার জন্য মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।”
ইরানের ফার্স নিউজ ও আল জাজিরা সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, ইসরায়েল এখন ভিন্ন কৌশলে হামলা চালাচ্ছে—মূলত সাইবার স্পাইং ও টেলিকমিউনিকেশন চ্যানেল ব্যবহার করে। এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে বিরাট সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছে তেহরান, যার অংশ হিসেবে শতাধিক সন্দেহভাজন গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তেহরান এখন কড়া অবস্থানে। ইরানি সংসদ সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে, যেখানে বলা হয়েছে—“ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা, গুপ্তচরবৃত্তি বা জাতীয় নিরাপত্তাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
বিশ্লেষণ বলছে, এ ধরনের সরাসরি স্বীকারোক্তি এবং পাল্টা পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এতে সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।
Leave a Reply