ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) চলমান পাঁচ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের হল ছাড়ার নির্দেশের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন—কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে তারা হল ছাড়বেন না। একইসঙ্গে তারা তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় কলেজ প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে ২২ জুন দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। এরপরই শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণার প্রতিবাদে একতরফা সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান এবং জানিয়ে দেন, “দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, হল ছাড়বো না।”
গত ২৮ মে থেকে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন ঢামেকের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, আবাসন সংকট ও ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসলেও প্রশাসন বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা বাস্তবায়ন করেনি।
ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসের জন্য জরুরি বাজেট পাস
বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত
নতুন ও বিকল্প আবাসনের জন্য আলাদা বাজেট ও বাস্তব পদক্ষেপ
ঝুঁকিপূর্ণ একাডেমিক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা ও নতুন ভবনের বাজেট
শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও পর্যবেক্ষণ
ঢামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম জানিয়েছেন,
“ছাত্রছাত্রীদের দাবির যৌক্তিকতা আমরা মেনে নিয়েছি। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু বারবার নোটিশ ও বিকল্প আবাসন নিশ্চিত করলেও কয়েকটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা করছে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বয়কট করেছে তাদের অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম, যা পুরো একাডেমিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে হল ছাড়ার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
তবে পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থী ও বিদেশি শিক্ষার্থীরা এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তৌহিদুল আবেদিন তানভীর বলেন,
“আমরা বারবার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো কার্যকর প্রতিক্রিয়া পাইনি। এখন কেবল আশ্বাস নয়, চাই দৃশ্যমান সমাধান।”
তিনি আরও জানান,
“সাত-আট বছর ধরে এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। গত ৬ জুন থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করেও প্রশাসনকে বোঝাতে পারিনি।”
এদিকে, প্রশাসন জানিয়েছে, ঢামেক হাসপাতালের সব ধরনের চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিকভাবে চালু থাকবে। শুধুমাত্র শিক্ষার্থী এবং আবাসনসংক্রান্ত কার্যক্রমে সীমিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply