টাঙ্গাইলের ঘাটাইল বিদ্যুৎ অফিসে দুর্নীতির জাল যেন দিন দিন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ভুয়া বিদ্যুৎ বিল, ঘুষ লেনদেন, মিটার জালিয়াতি এবং রিডিংয়ে বিশাল গরমিল—সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় হাজারো গ্রাহকের জীবন। বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও মিলছে না স্বস্তি; বরং বিদ্যুৎ অফিস এখন গ্রাহকদের কাছে হয়রানি ও প্রতারণার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়নের আনার গ্রামে সম্প্রতি ১৫-১৬টি সেচ পাম্পে একের পর এক ভুয়া বিল পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। শূন্য ইউনিট দেখিয়েও বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিল না দিলে মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে, বলে অভিযোগ করছেন গ্রাহকরা।
ভুক্তভোগী মোকছেদ আলী বলেন, “সব বিল পরিশোধ করেও হাতে ধরিয়ে দিয়েছে ৩৯ হাজার টাকার নতুন বিল। বলা হচ্ছে—৭ দিনের মধ্যে না দিলে মামলা করা হবে!”
ঘাটাইল বিদ্যুৎ বিক্রয় বিভাগের অধীনে বর্তমানে ৪৭,৪২১টি বৈধ সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রিপেইড মিটার ২৩ হাজার এবং ডিজিটাল মিটার ২৪ হাজার ৪২১টি। অথচ অভিযোগ রয়েছে, হাতে থাকা বিদ্যুৎ বিল ও মিটারের রিডিংয়ের মাঝে গরমিল ৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার ইউনিট পর্যন্ত।
দেলোয়ার হোসেন, আরেক ভুক্তভোগী বলেন, “বিলের কাগজে যা লেখা, মিটারে তার কিছুই মেলে না। জমা দেওয়ার পরও নতুন করে আবার ভুয়া বিল আসছে।”
সজীব নামের এক গ্রাহক বলেন, “আমার মিটারে এখনো ইউনিট জমা রয়েছে, অথচ ভুয়া বিল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ শুনতে চায় না, বিদ্যুৎ অফিসে গেলে শুধু বলে—‘বিল দাও, না হলে মামলা হবে’।”
আরও এক গ্রাহক তোরাব আলী জানান, “রিডিংম্যানরা কখনো মিটার দেখে না। চেয়ারে বসেই যেভাবে খুশি ইউনিট বসিয়ে বিল বানায়। আমাদের মিটারও ভেঙে ফেলা হয়েছে। চলছে মিটার বাণিজ্য। পুরো অফিস ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া।”
এ বিষয়ে ঘাটাইল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বীকার করে জানান, “বিষয়টি আমার জানা আছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a Reply