জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের টানা তৃতীয় দিনের আলোচনাতেও জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কোনো সমাধান আসেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে এখনো মতৈক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি, আলোচনার টেবিলে এখনও স্পষ্ট সিদ্ধান্তের অভাব রয়েছে।”
বিগত তিনদিনের আলোচনায় ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদের স্থায়ী কমিটি, সংরক্ষিত নারী আসন এবং প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যাপক মতবিনিময় হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের বিষয়ে আলোচনা নতুন করে জোরালো হয়েছে। “রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা, নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং কে বা কারা তাঁকে নির্বাচিত করবেন—এসব প্রশ্ন এখনও অমীমাংসিত। আমরা চাই রাষ্ট্রপতি হোন সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এবং উচ্চ কক্ষের সদস্যদের ভোটে, তবে পিআর পদ্ধতির উচ্চ কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ঘাটতির কারণে আমরা এই ব্যবস্থাকে সমর্থন করি না,” বলেন সালাহউদ্দিন।
বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীত্বের টানা মেয়াদ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সালাহউদ্দিন বলেন, “একজন ব্যক্তি যেন পরপর একাধিক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন না করতে পারেন, এমন সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে হবে। একইসঙ্গে, স্বৈরতান্ত্রিক শাসন রোধে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা জরুরি, যাতে আলাদা করে কোনো এনসিসি গঠনের প্রয়োজন না পড়ে।”
তিনি আরও বলেন, “যেহেতু ৭০ অনুচ্ছেদ আমরা ওপেন করেছি, তাই চাই সংসদ সদস্যরা যেন দলীয় হুইপের বাইরে গোপন ভোটে মত প্রকাশ করতে পারেন। এতে আইন প্রণয়ন আরও গণতান্ত্রিক হবে।”
সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের সীমা—এই সবগুলো ইস্যুতে কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি বলেই বারবার আলোচনার প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য অনুযায়ী, আগামী বৈঠকেও এই ইস্যুগুলো গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় থাকবে।
Leave a Reply