বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে চলেছে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে। রাজধানীর দীর্ঘদিনের তীব্র যানজট ও পণ্য পরিবহনের দুর্ভোগ কাটিয়ে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাচ্ছে এ সড়কের আংশিক চালুর মাধ্যমে। ঈদের আগে গাজীপুরের ভোগড়া থেকে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর পর্যন্ত রুটে এক্সপ্রেসওয়ের নিরবিচার ব্যবহার যাত্রীদের ভোগান্তি কমিয়েছে চোখে পড়ার মতো। রাজধানীর বিকল্প রুট হিসেবে এটি হয়ে উঠছে ব্যবসা-বাণিজ্য, পণ্য পরিবহন ও সাধারণ যাতায়াতের জন্য এক যুগান্তকারী অবকাঠামো।
দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গ বা দক্ষিণবঙ্গমুখী যাত্রার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম থেকে আমদানি করা পণ্য ঢাকা শহর হয়ে পাঠানো ছাড়া বিকল্প কোনো পথ ছিল না। এর ফলে প্রতিদিনের যানজট, সময়ক্ষেপণ এবং আর্থিক ক্ষতির বোঝা ছিল অগণন মানুষের জীবনে। ঈদসহ উৎসবমুখর সময়গুলোতে এই দুর্ভোগ পৌঁছাতো চরমে। তবে এবার ঈদ সামনে রেখে আংশিক চালু হওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মিলেছে স্বস্তির শ্বাস।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার পথের মূল নির্মাণ কাজ শেষ। চলছে আলোকসজ্জা, টোল প্লাজা ও রিপেয়ারিং-এর শেষ পর্যায়ের কাজ। আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত রাস্তাটি টোল ফ্রি থাকছে ঈদের বিশেষ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে। এরপর ১৫ জুন থেকে এটি পূর্ণাঙ্গ টোল চালুর মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
চালক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঈদ পরবর্তী সময়েও যেন এক্সপ্রেসওয়েটি যানবাহনের জন্য সব সময়ের জন্য খোলা রাখা হয়। কারণ এ রুট শুধু ঢাকা নয়, গোটা দেশের অর্থনীতি, যোগাযোগ ও লজিস্টিক ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই বিশাল প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত ৬৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাকি কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পণ্য পরিবহন হবে অধিকতর দ্রুত, বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি, আর যাত্রীরা পাবেন সময় ও মানসিক চাপমুক্ত চলাচলের নতুন অভিজ্ঞতা। ঢাকাকে পাশ কাটিয়ে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে তৈরি হবে একটি গতিশীল ও কার্যকর সংযোগ।
Leave a Reply