বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে ফেরার পথ উন্মুক্ত হলো দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে। হাইকোর্টের দেওয়া নিবন্ধন বাতিলের রায় বাতিল করে দলটিকে পুনরায় বৈধতা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফেরত পাবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।রবিবার (১ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই ঐতিহাসিক আদেশ দেন। এতে বলা হয়, জামায়াতের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন কমিশন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং প্রতীকের বিষয়ে সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত জানাবে।জামায়াতের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, “এক যুগের বেশি সময়ের আইনি লড়াই আজ শেষ হলো। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছিল, সেই ভুল আজ আদালতের রায়ে সংশোধন হলো। আশা করি এই রায়ের মাধ্যমে দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ সুগম হবে।”
তিনি আরও জানান, জামায়াত আপিল বিভাগের শর্ট অর্ডার হাতে পাওয়ার পর তা নির্বাচন কমিশনে জমা দেবে। কমিশন প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে দলটির নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।২০১৩ সালের ১ আগস্ট একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক দল হিসেবে অবৈধ ঘোষণা করে। পরে ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে দেয়। এর বিরুদ্ধে জামায়াত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করলেও মূল আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে আপিলটি খারিজ হয়ে যায়। পরে পুনরুজ্জীবনের আবেদন করলে আপিল বিভাগ সেটি গ্রহণ করে শুনানি শেষে ১ জুন চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে।রায়ের দিন জামায়াতের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দসহ শীর্ষ নেতারা।এই রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নির্বাচনী রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা জোরালো হলো। তবে প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাবে কি না, তা নির্ভর করছে ইসির সিদ্ধান্তের ওপর। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
Leave a Reply