গাজা উপত্যকায় বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় অন্তত ৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা, যা চলমান সংঘাতের আরেকটি ভয়াবহ দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
গাজা সিটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানা এই হামলাগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই বেসামরিক আবাসিক এলাকায় চালানো হয়। এরই মধ্যে মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সম্প্রতি সীমিত কিছু ত্রাণগাড়ি প্রবেশ করলেও তা গাজায় বিদ্যমান দুর্ভিক্ষ ও চিকিৎসা সংকট মোকাবেলায় একেবারেই অপ্রতুল বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক বলেন, “বর্তমানে যে পরিমাণ সহায়তা গাজায় প্রবেশ করছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য।”
আরো পড়ুন: গাজার হাসপাতালগুলোতে জেনারেটর টার্গেট করে ইসরায়েলের হামলা চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করার অভিযোগ
এদিকে, বুধবার পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধিদল পরিদর্শনে গেলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের দিকে সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে বলে জানা গেছে। ইউরোপ ও আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশের কূটনীতিকদের এই দলটি একটি তথ্য যাচাই মিশনে ছিল। ঘটনার পরপরই তারা এলাকা ত্যাগ করেন। যদিও কেউ আহত হননি, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
সংঘাতের আট মাস পূর্ণ হলেও গাজায় সহিংসতা বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩,৬৫৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১,২১,৯৫০ জনের বেশি। তবে গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়েছে, কারণ হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই যুদ্ধের সূচনা হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে চালানো একটি হামলায়, যেখানে ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০-র বেশি মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়।
সংঘাত যত দীর্ঘ হচ্ছে, ততই মানবিক বিপর্যয় ও কূটনৈতিক টানাপড়েন বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির দাবি জোরালো হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো স্থায়ী শান্তি উদ্যোগ সফল হয়নি।
Leave a Reply