1. admin@arshinagartv.com : admin :
  2. sobujhossain.asiantv@gmail.com : admin01 admin01 : admin01 admin01
  3. abclimited2020@gmail.com : hr@admin :
  4. kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমার সংকট: বাংলাদেশ জানাল সর্বশেষ অবস্থান ও কূটনৈতিক অবস্থান

রনি আহম্মেদ
  • Update Time : বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
  • ৫ Time View

রাখাইন রাজ্যের মানবিক সংকট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, আরাকান আর্মির উত্থান ও মিয়ানমার জান্তা সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ—সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার পরিস্থিতি ঘিরে একাধিক বিষয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনা ও বিশ্লেষণ। এসব প্রসঙ্গে বাংলাদেশের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। গণমাধ্যমে পাঠানো ব্যাখ্যাটি এসেছে প্রশ্নোত্তর আকারে, যা তুলে ধরা হলো নতুন করে সম্পাদিতভাবে

রাখাইনে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট নিয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউএনডিপির পূর্বাভাস অনুযায়ী, সেখানে দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা নতুন বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বোঝা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা। এর প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ রাখাইনে ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশ সাময়িকভাবে একটি মানবিক চ্যানেল খোলার চিন্তাভাবনা করে।

বাংলাদেশ প্রস্তাব করেছে, জাতিসংঘ যদি নিজস্ব চ্যানেলে ত্রাণ পাঠায়, তবে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে সহায়তা পৌঁছে দিতে লজিস্টিক সহায়তা দিতে পারে। তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। কারণ, আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক শর্ত পূরণের প্রয়োজন রয়েছে—যেমন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, সামরিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এবং নিরপেক্ষ সহায়তা বিতরণ।

যখন আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের সীমান্তবর্তী অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেয়, তখন বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপন করে। মূলত সীমান্ত নিরাপত্তা, সহিংসতা প্রতিরোধ ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে এই যোগাযোগ জরুরি হয়ে পড়ে।

একই সঙ্গে বাংলাদেশ রাখাইনে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করা এবং রোহিঙ্গাদের আরাকানের প্রশাসন ও নিরাপত্তা কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির বিষয়েও আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনা করছে।

এছাড়া, বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ঢাকা।

বাংলাদেশ চায়, মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতিমালার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা জানানো হোক। এজন্য বাংলাদেশের শর্তগুলো হলো:

🔹সহায়তা বিতরণে সব পক্ষের সম্মতি

🔸সহায়তাপ্রাপ্তদের নিরাপদ প্রবেশাধিকার

🔹সামরিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা

🔸কোনো সশস্ত্র সংঘর্ষ বা বাধা যেন না থাকে

আরাকান আর্মি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা রাখাইনের প্রশাসন ও নিরাপত্তা কাঠামোয় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত করবে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলবে। বাংলাদেশ চায়, তারা এই প্রতিশ্রুতির প্রতি অটল থাকুক। তা না হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে এটি একটি জাতিগত নিধন অভিযানে রূপ নিতে পারে, যা বাংলাদেশ কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
সহায়তা প্রদান ও গ্রহণ উভয় পক্ষের জন্যই নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়ে গেছে। সংঘাতপূর্ণ এলাকায় ল্যান্ডমাইন, আইইডি বা অন্যান্য বিস্ফোরকের উপস্থিতি একটি বড় হুমকি। কার্যকর ত্রাণ বিতরণের আগে এসব ঝুঁকি নিরসনের ওপর জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ মনে করে, আসন্ন মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত ভূমিকা প্রয়োজন। আঞ্চলিক দেশগুলোও বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। রাখাইনে স্থিতিশীলতা ফিরে না এলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ হয়ে যাবে। তাই বাংলাদেশ এই সংকট মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। ২০২৩ সাল থেকে রাখাইনে নতুন করে সংঘাত শুরু হলে কিছু রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে, যদিও সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।

এই প্রবণতা বন্ধ করতে বাংলাদেশ আরাকান আর্মিকে জানিয়ে দিয়েছে—রোহিঙ্গাদের ওপর আর কোনো সহিংসতা, বৈষম্য বা বাস্তুচ্যুতি সহ্য করা হবে না। বাংলাদেশ আশা করছে, আরাকান আর্মি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইন মেনে চলবে। তাদের ভূমিকা ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতেই ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান নির্ধারিত হবে।
বাংলাদেশ এই সংকটে একদিকে যেমন মানবিক দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত, অন্যদিকে নিজ সীমান্তের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়েও আপসহীন। রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি কেবল রোহিঙ্গা ইস্যু নয়, এটি একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ তাই চায় একটি টেকসই, সম্মিলিত এবং মানবিক সমাধান—যা রোহিঙ্গাদের নিজভূমিতে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পথ খুলে দেবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © arshinagar tv 2025
Design & Develop BY Coder Boss