ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী বৃহস্পতিবার (২২ মে) থেকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সারাদেশে ট্রাকসেল কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। চলবে ৩ জুন পর্যন্ত। তবে স্বস্তির আশ্বাস নিয়ে আসা এই কার্যক্রমের মাঝেই অসন্তোষের সুর—তেলের দাম একলাফে লিটারে ৩৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে, ডালের দাম বেড়েছে ২০ টাকা, আর চিনির দাম ১৫ টাকা।
টিসিবির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ কার্যক্রমে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের সদস্যরা পাবেন ভর্তুকিমূল্যে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মসুর ডাল ও ১ কেজি চিনি, মোট ৩০০ টাকায়।
মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রশ্ন
তবে নজরে পড়ার মতো বিষয় হলো, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে এই তিনটি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে চোখে পড়ার মতো হারে।
🔹তেল: আগে যেখানে স্মার্ট কার্ডধারীরা ১০০ টাকায় প্রতি লিটার তেল পেতেন, এখন সেটি ১৩৫ টাকা।
🔸ডাল: ৬০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা প্রতি কেজি।
🔹চিনি: ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮৫ টাকা প্রতি কেজি।
এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা এখনো দেয়া হয়নি। বিশেষ করে ঈদের আগে এমন বাড়তি বোঝা নিম্ন-আয়ের মানুষের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টিসিবির বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারীদের পাশাপাশি এবার সাধারণ ভোকতারাও ট্রাকসেল থেকে পণ্য কিনতে পারবেন।
এ উপলক্ষে দেশজুড়ে প্রতিদিন ৬৯০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাক মাধ্যমে এই কার্যক্রম চালানো হবে—
🔸ঢাকায় ৫০টি,
🔹চট্টগ্রামে ২০টি,
🔸প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে ১০টি করে,
🔹বাকি ৫৬ জেলা শহরে ১০টি করে ট্রাক।
শুক্রবার এবং ছুটির দিনেও এ কার্যক্রম চলবে।
টিসিবির উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি সহায়ক পদক্ষেপ, কিন্তু পণ্যের ভর্তুকি মূল্য যখন এতটা বাড়ে, তখন ‘সহায়তা’ শব্দটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি ভর্তুকিপ্রাপ্ত কর্মসূচিতে এক মাসের ব্যবধানে পণ্যের এমন দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক এবং জনআস্থা বিনষ্টকারী। এর ফলে ট্রাকসেল কার্যক্রমও অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে।
ঈদের মৌসুমে মানুষ যখন একটু স্বস্তির আশায় থাকে, তখন এমন মূল্যবৃদ্ধি কার্যত তাদের দৈনন্দিন সংগ্রামকে আরও কঠিন করে তুলছে।
Leave a Reply