সোমবার (১৩ মে) সকাল থেকে বাংলাদেশ-ভারত আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে এটি কোনো কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা প্রতিবেশী ভারতের নিষেধাজ্ঞা নয়—এটি মূলত রপ্তানি অনুমতিপত্র (ইএপি) সংক্রান্ত কাগজপত্র জটিলতার কারণে ব্যবসায়ীদের স্বেচ্ছায় নেওয়া সাময়িক সিদ্ধান্ত।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত ইএপি (Export Authorization Permit) এখনও ব্যবসায়ীদের হাতে না পৌঁছানোয় আজকের জন্য রপ্তানি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ায় আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ মে) সকাল থেকেই যথারীতি রপ্তানি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
ফারুক মিয়া আরও জানান, “আজকের মতো একটি ব্যতিক্রমী দিন ছাড়া প্রতিদিনই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গড়ে ৫০-৬০ মেট্রিক টন মাছ, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ মার্কিন ডলার, ভারতে রপ্তানি হয়। গতকালও (রবিবার) ৯,২৮৫ মার্কিন ডলারের মাছ রপ্তানি হয়েছে। আজ ইএপি না আসায় সেটি সম্ভব হয়নি। তবে এতে ভয়ের কিছু নেই, আগামীকাল থেকেই সব স্বাভাবিক হবে।”
চলতি অর্থবছরের (জুলাই–মার্চ) প্রথম ৯ মাসে আখাউড়া বন্দর দিয়ে ভারতে মাছ রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫৩ কোটি টাকা, যেখানে আমদানি ছিল মাত্র ১০৬ টন পণ্য। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও মাছসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানির মোট মূল্য ছিল প্রায় ৪২৮ কোটি টাকা। এই রপ্তানি মূলত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য—বিশেষ করে ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় প্রভৃতি রাজ্যে পৌঁছে থাকে।
অন্যদিকে, ভারত সরকারের সাময়িক আমদানি নিষেধাজ্ঞার কারণে আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পণ্য পাঠানোর পাশাপাশি ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যাও কমে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে।
সরকার মহিউদ্দিন মিশুর সরাসরি প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় রাজস্ব কর্মকর্তারাও নিশ্চিত করেছেন, এই রপ্তানি স্থবিরতার সঙ্গে ভারতের কোনো নিষেধাজ্ঞা জড়িত নয়। বরং শুধুমাত্র ইএপি অনুমতিপত্র বিলম্ব হওয়াই মূল কারণ।
আখাউড়া স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও রপ্তানিকারকরা আশাবাদী, এমন প্রশাসনিক জটিলতা ভবিষ্যতে এড়াতে ইএপি অনুমোদন প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও স্বচ্ছ করা হবে। এতে করে দৈনিক কয়েক কোটি টাকার মাছ রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
সারাংশে, আজকের এই সাময়িক স্থবিরতা মাছ রপ্তানির গতিপথে বড় কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। সব পক্ষের প্রস্তুতি অনুযায়ী, আগামীকাল সকাল থেকেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ফের সচল হবে মাছ রপ্তানির চাকা।
Leave a Reply