রাজধানীর আফতাবনগরে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ চার বছর বয়সী শিশু তানজিলা আক্তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
রোববার (১৮ মে) বিকেল ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
চিকিৎসকদের মতে, তানজিলার শরীরের ৬৬ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল, পাশাপাশি শ্বাসনালীতেও মারাত্মক ক্ষত হয়। এ ধরনের ইনহেলেশন ইনজুরি শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে বলেই জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।
এই বিস্ফোরণের ঘটনায় তানজিলার বাবা তোফাজ্জল (৩২), মা মানসুরা (২৪) এবং দুই বড় বোন তানিশা (১১) ও মিথিলা (৮) এখনো বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। তাদের শরীরের ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চারজনের অবস্থাই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে, আফতাবনগরের দক্ষিণ আনন্দনগর এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায়।
তোফাজ্জলের জামাই মো. রিপন জানান, বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে এলাকাটির গ্যাস লাইনে লিকেজের বিষয়টি বাড়িওয়ালাকে জানানো হয়েছিল। তবে অভিযোগ রয়েছে, মালিকপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
“ঘটনার দিন সকালে গ্যাসের গন্ধ স্পষ্টভাবে পাওয়া যাচ্ছিল। বিষয়টি বাড়িওয়ালাকে জানানো হয়। কিন্তু তিনি গুরুত্ব দেননি। রাতে যখন বাসায় মশার কয়েল জ্বালানো হয়, তখনই বিস্ফোরণ ঘটে,” — বলেন রিপন।
তোফাজ্জল পেশায় একজন দিনমজুর। চার কন্যা সন্তানের জনক তিনি। বিস্ফোরণে তার স্ত্রী ও তিন কন্যাই দগ্ধ হয়েছেন।
শুধু ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছেন তার বড় মেয়ে, যিনি তখন ছিলেন স্বামীর বাড়িতে।
দায়িত্বে অবহেলা, গ্যাস লাইনের অনিরাপদ ব্যবস্থাপনা এবং নির্মাণকাজে নিরাপত্তাহীনতা—সব মিলিয়ে এমন দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে রাজধানীতে।
এই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এবং দায়িত্ব নির্ধারণের বিষয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
Leave a Reply