1. admin@arshinagartv.com : admin :
  2. sobujhossain.asiantv@gmail.com : admin01 admin01 : admin01 admin01
  3. abclimited2020@gmail.com : hr@admin :
  4. kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com : kmsobuj.myreportjtv@gmail.com kmsobuj.myreportjtv@gmail.com
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০১:১৭ অপরাহ্ন

নাকবার ৭৭তম বার্ষিকীতে গাজায় আবার রক্তপাত, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০০-এর বেশি

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
  • ১২ Time View

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় সাড়ে সাত লক্ষের বেশি ফিলিস্তিনিকে নিজভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের স্মরণে যখন ফিলিস্তিনিরা নাকবার ৭৭তম বার্ষিকী পালন করছে, তখন ইসরায়েলের নতুন এক দফা ভয়াবহ বিমান হামলায় অন্তত ১১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন — যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

এটি এমন এক সময়ে ঘটল যখন গাজায় চলমান ১৯ মাসব্যাপী অবিরাম আগ্রাসনের ফলে পরিস্থিতি আগে থেকেই চরম বিপর্যস্ত। এই সঙ্গে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে একই ধরনের অভিযান শুরুর আহ্বানে ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী নেতারা মাঠে নেমেছেন।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, শুধু খান ইউনিস শহরে রাতভর চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬১ জন। একই সময়ে গাজা সিটি ও জাবালিয়াতেও বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে টানা ১৩টি বোমা বর্ষণ করা হয়।

এই হামলা থেকে হাসপাতালগুলোও রেহাই পায়নি। জাবালিয়ার আল-আওদা হাসপাতাল, খান ইউনিসের ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল এবং ইউরোপিয়ান হাসপাতাল ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইউরোপিয়ান হাসপাতাল এখন সম্পূর্ণ অকার্যকর।

আল জাজিরার তারেক আবু আজ্জুম, দেইর আল-বালাহ থেকে জানাচ্ছিলেন এক হৃদয়বিদারক চিত্র—“এটা যেন গণহত্যার আরেকটি দিন। গৃহগুলো কোনো সতর্কতা ছাড়াই বোমায় উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, পরিবারগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, উদ্ধারকারী দলগুলো প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে এবং পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধার করাও সম্ভব হচ্ছে না।

বুধবার রাতে গাজার কিছু এলাকায় হঠাৎ করে জারি করা হয় নতুন করে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ। ফলে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে হাজারো পরিবার রাস্তায় নেমে আসে।

আল জাজিরার হানি মাহমুদ বলেন, “মানুষ রাস্তায় তাদের জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। শিশু ও বৃদ্ধেরা কাঁধে যা পারছে তা নিয়ে পালাচ্ছে। কিন্তু কোথায় যাবে? কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। বোমায় Shelters-গুলোও ধ্বংস হয়ে গেছে।”

পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনি হাসান মোকবেল বলেন, “এই যুদ্ধ কোনো সেনাদের বিরুদ্ধে নয়, এটা সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। গাজায় অস্ত্র নেই, প্রতিরোধ নেই — শুধু শিশু ও বৃদ্ধেরা। তবুও বোমা বর্ষণ থেমে নেই।”

নাকবার দিনের স্মৃতিতে যখন মনোজগতে বেদনার স্রোত, তখন গাজাবাসীর মনে জেঁকে বসেছে ভয়—আরেকটি বড় আকারের স্থল অভিযান আসন্ন। “লোকজন ভাবছে, আবার হয়তো তাদের বাসস্থান ছেড়ে পালাতে হবে,” বলছিলেন আবু আজ্জুম। “এটা যেন নতুন করে আরেকটা নাকবা।”

আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা চললেও বাস্তবে তেমন কোনো শান্তির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

সপ্তাহের শুরুতে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি দোহায় সাক্ষাৎ করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। আল থানি আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্র যেন তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য উদ্যোগ নেয়।

“এই যুদ্ধ বন্ধ করতেই হবে। নারী ও শিশুরা নির্মমভাবে মরছে। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে,” বলেন কাতারের নেতা।

ট্রাম্প নিজে অবশ্য এক বিতর্কিত প্রস্তাব দেন — গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে “ফ্রিডম জোন” বানানোর কথা বলেন তিনি। “আমরা গাজাকে উন্নয়নের জায়গা বানাতে পারি, যুক্তরাষ্ট্র এটি পরিচালনা করতে পারে,” বলেন ট্রাম্প।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ আল জাজিরাকে জানিয়েছেন যে একটি সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি খুব শিগগিরই আসতে পারে। তিনি বলেন, “আমি সবকিছু নিয়েই আশাবাদী — খাদ্য সহায়তা, ওষুধ, যুদ্ধবিরতি — সবকিছু।”

পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযানের আহ্বান: “তাদের গুঁড়িয়ে দিতে হবে”
গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও সহিংসতা বাড়ছে। ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী ও উগ্রপন্থী নেতা বেজালেল স্মোটরিচ সরাসরি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “যেভাবে আমরা রাফা ও খান ইউনিস ধ্বংস করছি, সেভাবেই পশ্চিম তীরের ‘সন্ত্রাসের ঘাঁটিগুলো’ গুঁড়িয়ে দিতে হবে।”

তার এই বক্তব্যের ঠিক পরপরই পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহর ও শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক অভিযান চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। নাবলুস, তুবাস, বেথলেহেম, দোরা, কালান্দিয়া, ফাওয়ার, ও আসকার শিবিরে অভিযান ও গণগ্রেফতার চালানো হয়।
তামউন শহরে পাঁচ ফিলিস্তিনিকে হত্যা ও একজনকে গ্রেফতারের খবরও নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই অভিযানে ব্যাপক নিপীড়ন ও বেআইনি আচরণের অভিযোগ তুলেছে।

একদিকে গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে, অন্যদিকে পশ্চিম তীরের শহরগুলোয় আক্রমণ চলছে। এমন অবস্থায় অনেক ফিলিস্তিনি প্রশ্ন তুলছেন—এই ভূমিতে তাদের জন্য আর কিছুই কি অবশিষ্ট থাকবে?
“এটি শুধু যুদ্ধ নয়, এটি মুছে ফেলার প্রক্রিয়া,” বলেন একজন ফিলিস্তিনি মানবাধিকার কর্মী। “১৯৪৮ থেকে ২০২৪—নাকবা কখনও শেষ হয়নি।”
বিশ্বজুড়ে সমালোচনা ও উদ্বেগ বাড়লেও ইসরায়েলি সরকার নিজের কৌশল থেকে এক ইঞ্চি সরেনি। উগ্রপন্থীদের চাপে থাকা বর্তমান নেতৃত্বের কাছে এই হামলা যেন এক রাজনৈতিক অস্ত্র।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © arshinagar tv 2025
Design & Develop BY Coder Boss